চালতা চাষ করবেন যেভাবে

স্টাফ রিপোর্টার

অপ্রচলিত ফল হিসেবে চালতাকে অবজ্ঞা করলেও বর্তমানে এর স্বাদ ও ঔষধিগুণে আকৃষ্ট হচ্ছেন দেশের মানুষ। চালতা চাষে বাড়তি পরিশ্রম ও খরচ কোনোটাই লাগে না। একবার শুধু কষ্ট করে লাগাতে পারলেই প্রত্যেক মৌসুমে নিয়মিত ফল পাওয়া যায়। প্রচলিত পেয়ারা, আমড়া, জামরুলসহ অন্যান্য ফলের তুলনায় অপ্রচলিত ফল চালতার ফলন বেশি। কোনো রোগ-বালাই নেই, ফলটি পাখিতে নষ্ট করে না। তাছাড়া চালতা চাষে পরিচর্যা ও সার লাগে না। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বর্তমানে চালতা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

ভেজা স্যাঁতসেতে জায়গায় চালতা গাছ (Dillenia indica) ভাল জন্মে। দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই চালতা গাছ দেখতে পাওয়া যায়। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল জেলার বনাঞ্চলে এর উৎপাদন বেশি হয়। এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা গ্রামের হাট-বাজার এবং বাগান ঘুরে ঘুরে চালতা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। আবার ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে চালতা ক্রয় করে নিয়ে যান। পাইকারি ব্যবসায়ীরা সাইজ অনুযায়ী শ প্রতি চালতা ২ থেকে ৩ শ টাকা দরে স্থানীয় বাজার ও আড়ত থেকে কিনে নেন।

চালতার বীজ ও চারা রোপণ করলেই গাছ হয়। প্রতিটি চালতার মধ্যে ২০টির মত প্রকোষ্ঠ এবং এই প্রকোষ্ঠে ৪ থেকে ৫টি বীজ থাকে। চালতা গাছে মে-জুন মাসে সাদা রঙের সুগন্ধযুক্ত ফুল ফুটে এবং শীতের শুরুতে ফল পাকতে শুরু করে। ডিসেম্বর মাসে ফল থেকে বীজ ছাড়িয়ে শুকিয়ে নিয়ে ফেব্রয়ারি-মার্চ মাসে রোপণ করতে হয়।

জংলি ফল চালতা বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন এবং ঔষধিগুণের কারণে অনেকেই বসত বাড়িতে অন্যান্য ফলের সাথে এর চাষ শুরু করেছেন। চালতা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ফল। এ থেকে তৈরি আচার, চাটনি, জেলি শরবত খেতে খুবই সুস্বাদু। চালতার রস চিনি ও পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে সর্দি ও জ্বর ভাল হয়। শক্তিবর্ধক ওষুধ হিসাবেও ব্যবহৃত হয় চালতার রস। রক্ত আমাশয়ের জন্য পাকা চালতা খেলে উপকার পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *