চক্রবৃদ্ধি সুদ বিশ্বে কোথাও নেই

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যাংক ঋণে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বিশ্বের কোথাও নেই। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা এই চক্রবৃদ্ধি ঋণ সুদ হার। যেসব ভালো ব্যবসায়ী চক্রবৃদ্ধি সুদ হারের কারণে খেলাপি ঋণের আওতায় পড়েছেন তাদের মাফ করে দেওয়া হবে।

সেগুলো আমরা কমিয়ে দেব। আগামী বাজেটের আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পর্ষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চক্রবৃদ্ধি সুদ হার পদ্ধতি শুধু আমাদের দেশে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরল সুদ পদ্ধতিই পরিপালন করা হবে। আমাদের এখানে দেউলিয়া আইন নেই। নাগরিকদের বাধ্যতামূলক জীবনবীমা নেই। বন্ড মার্কেট নেই। আর্থিক খাতের দুর্বলতা এগুলোর জন্য। গত বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৮ শতাংশ।

তার আগের বছর ৭.২ ও তারও আগের বছর ৭.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না। কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি আছে। তাই বলে ব্যাংক খাত ধ্বংস হয়ে যায়নি। যারা সমালোচনা করে তার একজন মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারেনি। যারা ঋণ নিয়েছে তারাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অনেক কষ্টের কাজ।

প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা অনেক সহজ। যার ৫টি প্রতিষ্ঠান আছে এর মধ্যে একটি মন্দ হলে সবগুলো বন্ধ করে দিতে হবে এর পক্ষে আমি নই। আমরা কাউকে কষ্ট দেব না। আর যারা অন্যায় করেছে, তারাও যদি এসে বলে, আমি অন্যায় করছি, টাকা শোধ দিয়ে দেব- তাহলে তাদেরও মাফ করে দেব। দেশের স্বার্থে এ কাজটি করা হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে দুই পক্ষ দায়ী। অসাধু ব্যবসায়ী ও তাকে যারা সাহায্য করেছেন তারাও দায়ী। উভয়ের বিচার করা হবে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং খাতে যেসব অনিয়ম হয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হলে আমাকে সময় দিতে হবে। আমি পদক্ষেপ নেব, সেজন্য কাজ করছি।
যেখানে আইনের ব্যত্যয় আছে, সেগুলো সংশোধন করে কাজে হাত দেব। যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে কেউ বের হতে না পারে।

মুস্তফা কামাল বলেন, আমি একটা জায়গায় হাত দেব। যেভাবে ব্যাংকের বোর্ডগুলো পরিচালিত ও গঠিত হচ্ছে, সেখানে সত্যিকারভাবে যারা ব্যাংকিং বোঝেন, তাদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে এই কাজটি করা হবে।

সাক্ষাৎকার নিয়ে, যার যোগ্যতা আছে, কাজ করতে পারবেন, ব্যাংকিং বোঝেন, অ্যাকাউন্টিং বোঝেন, আইন বোঝেন তাদের আমি ব্যাংকের পরিচালক বানাব। তিনি আরও বলেন, দেশের সব মানুষকে আবার ব্যাংকমুখী করার জন্য চেষ্টা করা হবে। আমরা আগামীতে চেষ্টা করব, পিছিয়ে পড়া ও রংপুর বিভাগের একাধিক জেলায় ক্রপ ইন্স্যুরেন্স করার। একটা বা দুটো হাওরে আমরা ক্রপ ইন্স্যুরেন্স করব। একটা শক্তিশালী অর্থনীতি যেভাবে আচরণ করে, সেভাবে আমরাও শুরু করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *