গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম, ক্ষেত থেকে পাতে নিতে সবজি
রমজান কেন্দ্র করে দিনাজপুরের বিভিন্ন বাজারে মাছ, মাংস, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার হিড়িক পড়েছে। কিন্তু সবজি থেকে শুরু করে সব জিনিসেরই দাম বাড়তি। দামের উত্তাপে দিশেহারা নিম্ন-মধ্যবিত্তরা। অনেকে চাহিদার তুলনায় কম কিনছেন বাজার।
এদিকে কম দামে কৃষকের বিক্রি করা পণ্য খুচরা বাজারে দ্বিগুণ হচ্ছে। ফলে ক্ষেত থেকে পাতে নিতে দ্বিগুণ দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
দিনাজপুর পৌর শহরের বাহাদুর বাজার, চক বাজার, সুইহারী বাজার ও নিউটাউন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পেঁয়াজ এক পাল্লা (৫ কেজি) ১৮০ টাকা, যা খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাঁচদিন আগেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ২৬ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, পেঁয়াজ তাদের নাটোর থেকে আনতে হয়। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে; তাই খুচরা দামও বেশি। দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচামরিচের। চারদিন আগে যে মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি, সেই মরিচ এখন ৮০ টাকা।
বাহাদুর বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা আজগার আলী বলেন, কাঁচামরিচ এসেছে বগুড়া, পঞ্চগড় ও নীলফামারীর ডোমার থেকে। সেখানেই দাম বেড়েছে। আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।
রোজার অন্যতম সবজি বেগুনের দামও বেড়েছে। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা দুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজি। এ বেগুন তিন হাত বদল হয়ে দাম বাড়ছে কেজিতে ২৫ টাকা।
সকালে শসা নিয়ে বাহাদুর বাজারে এসেছিলেন সদর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ। তিনি এক সপ্তাহ আগে শসা এক পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি করেছিলেন ৬০ টাকায়। আজ সেই শসা বিক্রি করছেন এক পাল্লা ৭৫ টাকা। তবে পাইকারের কাছ থেকে এক পাল্লা শসা ৯০ টাকায় কিনছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা সেই শসা বিক্রি করছেন প্রকারভেদে ৪০-৪৫ টাকা কেজি।
মাসুদ আলম নামে এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘পরিবহন ও লেবার খরচ, দোকান ভাড়া এবং বাজারের খাজনাসহ আমাদের হিসাব করতে হয়। তাই দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।‘
মকবুল হোসেন বাহাদুর বাজারে লেবু বিক্রি করেন ৪০ বছর। তিনি বলেন, ‘এখন লেবুর সিজিন নয়। তাই দাম একটু বেশি। ২৫ টাকা থেকে শুরু করে ৪০ টাকা হালি পর্যন্ত লেবু বিক্রি হচ্ছে। দুদিনে হালিতে ১০ টাকা বেড়েছে।’
সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রাম থেকে বাজার করতে এসেছিলেন চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘দাম যা বাড়ার তা তো আগেই বেড়েছে। পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, শসা, বেগুন ও লেবুর দাম একটু বেশি বেড়েছে। বাজারে এ দাম থাকবে না। প্রথম রমজান সবাই বাজার করছে, তাই দাম বেশি। বাজার পড়ে যাবে।’
এদিকে মুরগি, মাছ ও মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আমদানি বেশি হওয়ায় মাছের দাম প্রকার ভেদে কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৩০-৪০ টাকা বেড়ে ৭০০ টাকা হয়েছে।
উপশহর মিস্ত্রি পাড়া থেকে বাহাদুর বাজারে এসেছেন আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘গরুর মাংস চারদিন আগে কিনেছি ৬৪০ টাকা কেজি। সেই মাংস আজ কিনলাম ৭০০ টাকা কেজি।’