গাইবান্ধায় পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ
উজানের ঢলে গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অনেক গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এরইমধ্যে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা উপজেলার শতাধিক পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে বাড়িঘর, ভিটেমাটি সব হারিয়েছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি হাজারও মানুষ।
জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় বন্যার পানি ওঠায় ১২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িক পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫টি এবং চার উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১১টি।
গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (১৬) সকাল থেকে চার উপজেলায় আকস্মিক বন্যার পানি বিদ্যালয়ের মাঠ ও কক্ষে ঢুকে পড়ে। তবে ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অবস্থা ভয়াবহ। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চার উপজেলায় অন্তত ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।
অনেক ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উড়িয়া, গজারিয়া, ফুলছড়ি, ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ফুলছড়ির চর খোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীন সরকার বলেন, উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে এখন বন্যার পানি। স্কুলের অফিস ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকেছে। হাজারও মানুষ পানিবন্দি। ঘরবাড়ি ডুবে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
রতনপুর গ্রামের আজল মিয়া বলেন, ‘চারদিকে শুধু বন্যার পানি। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। পানিবন্দি হয়ে আছি। স্কুলঘরে পানি উঠছে। এ অবস্থায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই কীভাবে?’
গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.হোসেন আলী বলেন, জেলায় চার উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান সাময়িক বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেলে আবার পাঠদান শুরু করা হবে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোড সূত্র জানায়, ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ও ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।