গরমে শিশুকে যেভাবে খাবার খাওয়াবেন

গরমে অনেক শিশুকে দেখা যায় স্কুলে অনুপস্থিত থাকতে। কিন্তু কেন? গরমের কারণে শিশুদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। বিশেষ করে পুষ্টিগত বিভিন্ন সমস্যা। প্রচণ্ড গরমে যেহেতু গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়, তাই শিশুরা বেশি খেলাধুলা ও শারীরিক কার্যক্রমে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই শিশুদের সঠিক পুষ্টিগত অবস্থা বজায় রাখার জন্য এবং গরমে বিভিন্ন রকম অসুখ প্রতিরোধ করতে সঠিক পুষ্টি খুব জরুরি।

১. শিশুকে সঠিক সময় খাওয়ান

এই সময় সঠিক পুষ্টির এবং ক্যালোরির চাহিদা বজায় রাখার লক্ষ্যে সঠিক সময় মেনে খেতে হবে। সকাল ৮ থেকে ৯টার মধ্যে নাস্তা  খেতে হবে।  দুপুর ১টা থেকে দেড়টার ভেতর দুপুরের খাবার খেতে হবে। সন্ধ্যা ৭ থেকে সাড়ে ৭টার ভেতর রাতের খাবারের রুটিন করতে হবে।

মধ্যসকাল, বিকেল ও শোবার আগে হালকা খাবার বিশেষ করে তরল খাবার শিশুকে দিতে হবে।

২. সহজে হজম যোগ্য খাবার শিশুকে পরিবেশন করুন

শিশুরা প্রচুর ছোটাছুটি ও দৌঁড়ঝাপ করে। অতিরিক্ত শারীরিক শ্রমের পর যেকোনো ভারী খাবার শিশুদের হজমে ব্যাঘাত ঘটায়। এমনকি বমি বমি ভাবের সৃষ্টি করে। তাই অতিরিক্ত তেলের খাবার,ভাজা পোড়া খাবার শিশুদের দেওয়া যাবে না। গ্রীষ্মে শিশুদের চিপস, বাদাম, পাপড়, চানাচুর, চিকেন ফ্রাই ইত্যাদি না খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। নরম, সুস্বাদু, ঘরে তৈরি খাবার যা সহজে হজম হয় সেগুলো শিশুকে দিতে হবে। পুডিং, নুডলস, নরম ভাত, মাছ, মুরগির মাংস, নরম সুজি, ঘরে তৈরি ফলের জুস ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

৩. দুধের বিকল্প খাবার

দুধ শিশুদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি খাবার যা ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের বড় উৎস। কিন্তু গ্রীষ্মে শিশুকে জোর করে দুধ খাওয়ালে অনেক শিশুই তা হজম করতে পারে না বা অস্বস্তিবোধ করে। যদি শিশুরা গরমে দুধ খেতে না চায় তবে জোর না করে লাস্যি, মাঠা, মিল্ক সেক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

৪. শিশুকে তাজা খাবার খাওয়াতে হবে

এই সময় শিশুদের তাজা খাবার খাওয়াতে হবে। গরমের সময় ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং অনেক বেড়ে যায়। এ ছাড়া গরমে খাবারে দ্রুত পচন শুরু হয়। তাই শিশুকে তাজা খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুদের স্কুলের টিফিনে ফল ও সবজির কোনো তৈরি খাবার না দেওয়াই ভালো। কেননা সবজি ও ফল দ্রুত পচে ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। টিফিন হিসেবে বিস্কুট, ডিমের নুডুলস, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।

৫. শিশুকে মৌসুমি ফল ও ফলের রস খেতে দিন

গরমে তরলের চাহিদা ও ভিটামিন মিনারেলের দৈনিক চাহিদা পূরণে ফল দারুণভাবে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরী। তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু ইত্যাদি শিশুদের জন্য অনেক উপকারি। কোনো শিশু যদি ফল ও পর্যাপ্ত পানি না খায় সে ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি ফলের রস তরল, ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।

৬. তরল খাবার পর্যাপ্ত দিন

গরমে শিশুদের অনেক ঘাম হয়। এর ফলে শিশুদের পানি ও ইলেকট্রোলাইটসের  ঘাটতি দেখা দেয়। অনেক শিশুকে ডিহাইড্রেশন ও হিটস্ট্রোক নিয়েও হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়। তাই শিশু পানি ও তরল খাবার কতটুকু খেল সেই বিষয়ে ভালোমতো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। স্কুলে পানি কতটুকু দেওয়া হলো আর কতটুকু পানি শিশু খেল তা লক্ষ করতে হবে।

স্কুল ছুটির পর ডাবের পানি, লেবুর সরবত, কাঁচা আমের জুস ইত্যাদি দেওয়া গেলে ভালো।

নিম্নে শিশুদের জন্য গরম উপযোগী কতগুলো খাবারের নাম দেওয়া হলো :

* আইসক্রিমের সাথে ফল

* ব্যানানা ও ইয়োগার্ট সুদি

* দই বা ঘোল

* পপকর্ন

* চিড়া, দই

* ফুড কাস্টার্ড

* পুডিং

* পেন কেক ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *