খুশকি সমস্যা দূর করার ম্যাজিক টিপস

খুশকি আমাদের শরীরের অন্যতম একটি সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলা হয়। শরীরের সোবিয়াম গ্রন্থির প্রদাহের ফলে সাধারণত খুশকি হয়।

এ বিষয়ে হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক শ আ মোনেম জানান, খুশকির প্রভাবে মাথায় প্রচণ্ড চুলকানি ছাড়াও চুল নিয়মিত পড়তে পারে। খুশকির জন্য যদি ব্যক্তিবিশেষে রোগগুলো নির্ণয় করে চিকিৎসা করা হয়, তবে অনেক ভালো ফল পাওয়া য়ায়। আর যদি অনুমানভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে তেমন ভালো ফল আসে না।

কোথায় হয়

খুশকি শরীরের কোন কোন জায়গায় হয়, এ বিষয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালের লেজার সেন্টার বিভাগের চিকিৎসক মোশারফ আহমেদ খসরু বলেন, খুশকি সাধারণত মাথার ত্বকে, মুখে, বুকে, চোখের পাপড়ি, নাকের দুই পাশে হয়ে থাকে। খুশকি নারীর তুলনায় পুরুষের বেশি হয়। খুশকি সব বয়সে হলেও তরুণ বয়সে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

কারণ

খুশকি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ডা. খসরু বলেন, খুশকির মূল কারণ এখনো জানা যায়নি। সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণের ফলে এ সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণেও এটি হয়। এ ছাড়া অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, চুলের শুষ্কতা এসব কারণে চুলে খুশকি হয়। তবে খুশকি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়।

খুশকি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ডা. মোনেম জানান, মাথার ত্বক থেকে বের হওয়া তেলজাতীয় একধরনের পদার্থ-ফেবোরিয়া, বাইরের ধুলোবালি, শরীরে হরমোনের সমস্যা, চুলে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার ইত্যাদি নানা কারণে খুশকি হতে পারে।

খুশকি প্রতিরোধে

শ্যাম্পু ব্যবহার : যাঁদের খুশকি বেশি হয়, তাঁরা প্রতিদিন চুলে পরিমিত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার : বাইরে বের হলে ধুলোবালি রোধে মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না ব্যবহার করতে পারেন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন : চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। মাথার ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে। চর্বিজাতীয় খাবার খুশকি রোধে সহায়তা করে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা : চুল খুশকিমুক্ত রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। চুল অপরিষ্কার থাকলেই খুশকি বেশি হয়। অনেকেই ভেজা অবস্থায় চুল বেঁধে রাখেন। এটা ঠিক নয়। চুল ভালো করে মুছে নিতে হবে। এর পর ধীরে ধীরে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিতে হবে। চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিলে ভালো।

প্রতিকার

ডা. মোনেম বলেন, যদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে চুলের খুশকি হয়, তবে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। ফাংগাস সংক্রমিত হলে অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ, আর অ্যালার্জির কারণে খুশকি হলে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ সেবন করতে হবে। এ ছাড়া খুশকি দূর করতে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক শ্যাম্পুও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি খুশকির সমস্যা প্রকট হয়, চুলে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু লাগিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এর পর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুবার করে দুই থেকে চারবার ব্যবহারে খুশকি কমে যায়।

ডা. খসরু বলেন, এ ছাড়া অ্যান্টিফাংগাল ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। খুশকির প্রকোপ বেশি হলে স্টেরয়েড লোশন ব্যবহার করতে পারেন। অথবা মাইল্ড স্টেরয়েড ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *