খাদ্যপণ্য নাগালের বাইরে, মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে খাদ্যপণ্যের দাম। অথচ সেভাবে বাড়ছে না আয়। ফলে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে খাদ্যপণ্য। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কিছুটা স্বস্তি এসেছিল মূল্যস্ফীতি খাতে। অক্টোবর মাসে ফের খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ১০০ টাকায় যে খাদ্যপণ্যে কেনা গেছে সেই একই পণ্য কিনতে ১১৩ টাকা ৮০ পয়সা বাড়তি খরচ করতে হয়েছে ভোক্তাদের।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।

বিবিএসের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাকজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে সাধারণ বা গড় মূল্যস্ফীতির হারও বেড়েছে। এই হার বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ হয়েছে গত মাসে যা ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। নভেম্বর মাসে বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে। অক্টোবর মাসে এখাতে মূল্যস্ফীতিরে হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, অথচ নভেম্বর মাসে বেড়ে যা হয়েছে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, অক্টোবরে যা ছিল ১১ দশমিক ২৬ ভাগ। গত বছরের একই সময়ে অর্থাৎ নভেম্বরে দেশের গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৪১ ও ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি বছরের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৭৫ ও ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ, এবং গত বছরের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৬ ও ৮ শতাংশ।

নভেম্বরে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ; অক্টোবরে যা ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। নভেম্বরে শহরাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬৩ ও ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০২৪ সালের অক্টোবরে যা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫৩ ও ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং

২০২৩ সালের নভেম্বরে যা ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৫৮ ও ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।

দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের কাছাকাছি। বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দেশের গড় চলন্ত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।

সারা দেশের ৬৪টি জেলার ১৫৪টি হাটবাজার থেকে নির্ধারিত সময়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই ভোক্তা মূল্য সূচক প্রণয়ন করা হয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে বলা হয় অর্থনীতির নীরব ঘাতক। এই ঘাতক কতটা নির্মম হতে পারে, নিম্ন আয়ের মানুষেরা তা হারে হারে টের পান। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি, কারণ, নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যয়ের বড় অংশ চলে যায় খাদ্যের পেছনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *