কয়লা উত্তোলন বাড়িয়েছে চীন
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীনে কয়লা উত্তোলন বেড়েছে। শীতকালীন চাহিদা এতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া কয়লা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণেও চাহিদায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা জানান, শীতকালীন চাহিদার বিপরীতে সরবরাহে যাতে ঘাটতি না থাকে, সেজন্য চীন সরকার খনি মালিকদের উত্তোলন বাড়াতে উৎসাহিত করেছে। ফলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে কয়লা উত্তোলন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।
চীন বিশ্বের শীর্ষ কয়লা উত্তোলন ও ব্যবহারকারী। ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস জানায়, গত দুই মাসে দেশটি সব মিলিয়ে ৬৮ কোটি ৬৬ লাখ কয়লা উত্তোলন করেছে। গত বছরের একই সময় উত্তোলনের পরিমাণ ছিল ৬১ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার টন।
চীন সরকার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খনিগুলোকে সৌরবর্ষের উৎসব সামনে রেখে উত্তোলন বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছিল। এক্ষেত্রে ছুটির দিনগুলোয়ও উত্তোলন অব্যাহত রাখতে বলা হয়। উদ্দেশ্য বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা।
তবে মাসভিত্তিক উত্তোলন বাড়লেও দৈনিক উত্তোলন ডিসেম্বরের রেকর্ডের তুলনায় নিম্নমুখী রয়েছে। ডিসেম্বরে দেশটিতে দৈনিক ১ কোটি ২৪ লাখ টন কয়লা উত্তোলন হয়েছিল। মূলত সৌরবর্ষের ছুটিতে বেসরকারি খনিগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক উত্তোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে কয়লার মজুদ বাড়ানো এবং তা সংরক্ষণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্তত ১৫ দিন চলার মতো মজুদ রাখতে বলা হয়েছে।
চীনের বাজারে সবচেয়ে বেশি কয়লা সরবরাহ করে ইন্দোনেশিয়া। কিন্তু দেশটি ১ জানুয়ারি কয়লা রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে চীন। সমুদ্রপথে চালান আসতে দেরি হওয়ায় লাফিয়ে বাড়তে থাকে পণ্যটির চাহিদা। ফলে আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে দাম।
বাজারে এমন অস্থিতিশীলতার মধ্যেই নতুন বিপত্তি হয়ে দাঁড়ায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারণে আরো এক ধাপ বাড়ে জ্বালানি পণ্যটির দাম। সরবরাহে জটিলতা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে দৈনিক ১ কোটি ২০ লাখ টনেরও বেশি কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে চীন।
উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে নতুন চ্যালেঞ্জ কভিড-১৯ ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ প্রবাহ। বিশেষ করে কয়লাসমৃদ্ধ অঞ্চল ইনার মঙ্গোলিয়ায় সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে কয়লা উত্তোলন ও পরিবহন—দুটিই বাধার মুখে পড়েছে।