ক্রিপ্টো ব্যবসার আঞ্চলিক কেন্দ্র হতে চায় হংকং

স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্বজুড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা কঠিন হয়ে উঠেছে। গত নভেম্বরে খাতটি বেশকিছু বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারও ক্রিপ্টো খাতের লাগাম টেনে ধরতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মনীতি কঠোর করা হলেও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে নতুন নতুন ভার্চুয়াল হাব গড়ে উঠতে থাকে। এর মধ্যে গতকাল হংকং নতুন একটি নিয়মের প্রস্তাব দিয়েছে। যেখানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত এক্সচেঞ্জগুলোয় খুচরা বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্দিষ্ট সীমা বা লার্জ ক্যাপ টোকেন নির্ধারণ করা থাকবে। চীনের মূল ভূখণ্ডে যেখানে ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেখানে হংকংয়ের এ পদক্ষেপ যথেষ্ট আগ্রাসী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে কোন ক্রিপ্টোকারেন্সির লার্জ টোকেন নির্ধারিত হবে সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানায়নি হংকংয়ের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফিউচার কমিশন (এসএফসি)। তবে সংস্থাটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিটকয়েন বা ইথার ব্যবহার হতে পারে।

চীন ক্রিপ্টো ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ায় দেশটির ওয়েবথ্রি স্টার্টআপ হিসেবে পরিচিত কোম্পানিগুলো স্থানীয় বাজার ছেড়ে বিদেশের বাজারগুলো ধরতে চাইছে। অনেক ক্রিপ্টো উদ্যোক্তাই সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ে নতুন করে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করতে চাইছে, যেসব দেশে ক্রিপ্টোবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। যদিও এসব ব্যবসার পরিচালনার ক্ষেত্রে চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ চীনের প্রযুক্তি সুলভ ও সহজলভ্য।

নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হংকংয়ের নতুন নিয়ম চালু হলে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার জন্য পরিবেশ আরো সহনীয় হবে। কিছু চীনা কোম্পানি হংকংয়ে গিয়েও কাজ শুরু করতে পারে। এতে চীনের কাছাকাছি থেকেই ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা করা সম্ভব হবে। ডিজিটাল সম্পদ খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হংকংয়ে বসে ব্যবসা করলে ঘরে বসেই ব্যবসার অনুভূতি পাবেন তারা। ক্রিপ্টো খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তা জাস্টিন সান জানান, ‌সিঙ্গাপুর থেকে ব্যবসা পরিচালনার মূল কেন্দ্র সরিয়ে এখন হংকংয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি।

হংকং ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এইচকেবিটএক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা কেন লো বলেন, ‘‌বার্তাটি স্পষ্ট। যত দ্রুত এসএফসি ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার সম্পর্কে জানবে, তত দ্রুত তারা এ বিষয়ে বন্ধুসুলভ হবে। আমি মনে করি তাদের মধ্যে পরিবর্তনের ইচ্ছা রয়েছে।’

যদিও এশীয় আর্থিক খাত সবসময়ই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়ে ইতিবাচক ছিল না। ২০১৮ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসাকে সীমিত করতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তিন বছর পর চীনও নিজের ভূখণ্ডে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিল। গত অক্টোবরে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার যখন বেশ টালমাটাল, ঠিক তখন হংকং কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করল যে তারা এ অঞ্চলে খাতটির কেন্দ্রবিন্দু হতে চায়। এজন্য নিয়মনীতিতেও পরিবর্তন আনা হলো। নিবন্ধিত প্লাটফর্মগুলোর জন্য নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধাও ঘোষণা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *