কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এ বছর রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছবে
এ বছর কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কোরিয়া ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান অনুসারে এই বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২.০১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের থেকে ৫৪.৬% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ছিল ১.৩০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০২০ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নিত হয়েছে অর্থাৎ ৩৫.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশে কোরিয়ার রপ্তানি ২০২০ সালের ১.০৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৬১.৯% বেড়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০১১ সালে ১.৮৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হওয়ার পর প্রায় এক দশক ধরে ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে স্থবির ছিল। কোরিয়াতে বাংলাদেশের রপ্তানি, যা ২০০৭ সালে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১১ সালে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল ২০১৩ সালে এটি ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপরে পৌঁছানোর পরে স্থবির হয়। তবে, কোভিড-১৯ মহামারী সত্ত্বেও, কোরিয়াতে বাংলাদেশের রপ্তানি ২০১৯ সালে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে এবং ২০২০ সালে ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। এটি এই বছরের শেষ নাগাদ ৫০০-এর মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
কোরিয়ায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য হচ্ছে পোশাক, খেলাধুলা ও অবকাশ যাপনের সামগ্রী এবং ব্রোঞ্জ স্ক্র্যাপ। কোরিয়ায় মোট রপ্তানির ৮১ শতাংশে হয় তৈরি পোশাক দ্বারা যা আগের বছরের তুলনায় ৩২.৪% বৃদ্ধি পেয়েছ ৪৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে হয়েছে। যেখানে খেলাধুলা এবং অবকাশকালীন আইটেম ৩০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে অর্থাৎ ৯২% বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রোঞ্জ স্ক্র্যাপ রপ্তানি বেড়ে ১৭৫% হয়েছে যা ৯.১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান।
বাংলাদেশে কোরিয়ার রপ্তানি ২০১১ সালে ছিল ১.৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বহু বছর ধরে প্রায় ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে থেমে ছিল এবং 2020 সালে তা ১.০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। তবে এই বছরের শেষের দিকে ২০১১ সালের লেভেল কে অতিক্রম করে যাবার সম্ভবনা আছে। বাংলাদেশে কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হচ্ছে যন্ত্রপাতি, পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, ইস্পাত ও কীটনাশক। যন্ত্রপাতি রপ্তানি ১০৭% বেড়ে ২৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা বাংলাদেশের উৎপাদন খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির প্রতিফলন। পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য ২৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাথে ৬৪.২% বৃদ্ধি পেয়েছে। ইস্পাত রপ্তানি ১৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৪৫.৭% এবং কীটনাশক ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৬৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লি জাং-গুণ বলেছেন, এই বছরটি কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দশন রাখবে এবং আশা করি আগামী বছরগুলিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক খাত বাংলাদেশের সাথে কোরিয়ার অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য নীতির সুবিধা নেবে যা ২০০৮ সাল থেকে কোরিয়ার বাজারে ৯৫% পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করে আসছে।