কোনো রকমে টিকে থাকলো প্রধান সূচক

স্টাফ রিপোর্টার

সপ্তাহর প্রথম কার্যদিবস রোববার লেনদেনের প্রথম দিকে মূল্যসূচকের বড় উত্থান এবং লেনদেনে ভালো গতি দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। লেনদেনের শেষ দিকে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ালে বড় হয় দরপতনের তালিকা। এতে নিচের দিকে নেমে যায় মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমে লেনদেনের গতি।

অবশ্য এরপরও দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সামান্য বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। একই সঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সামান্য বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। একই সঙ্গে ডিএসইর মতো এ বাজারটিতেও দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।

এর আগে ঈদের আগে ও পরে মিলে টানা ৯ কার্যদিবস সূচক বাড়ার পর গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হয় মাত্র তিন কার্যদিবস। এরমধ্যে দুই কার্যদিবসেই মূল্যসূচকের পতন হয়।

এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাজুড়ে সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। এতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১২ পয়েন্ট।

কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেন। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় চলে আসে। ফলে এক পর্যায়ে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে এবং লেনদেনের গতি কমে যায়।

অবশ্য লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় কিছু বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় প্রধান মূল্যসূচক। তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ২১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। অন্যদিকে দাম কমে ৫টি প্রতিষ্ঠান নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে চলে এসেছে। এতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।

এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৯ পয়েন্ট দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৪৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- একমি ল্যাবরেটরিজ, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, ইউনিক হোটেল, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, জেমিনি সি ফুড এবং আমরা নেটওয়ার্ক।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির এবং ৮৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *