কে এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই

জন্মসূত্রেই নামের সাথে ‘ভাই’ পদবী পেয়েছেন। তাঁর পরিবার বাহাই ধর্মের অনুসারী হওয়ায় পরিবারের নারী-পুরুষ সবার নামের শেষে ‘ভাই’ যুক্ত হয়। পুরান ঢাকার আরমানিতোলায় তাঁর জন্ম। ধীরে ধীরে তিনি বাস্তব জীবনেও হয়ে ওঠেন ভাই বা গডফাদার। আপনারা পড়ছেন বাংলাদেশের অন্যতম একজন রহস্যময় ব্যক্তি আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গল্প।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বাংলাদেশের রহস্যময় ব্যাক্তিদের তালিকা করলে তালিকার স্বল্প সংখ্যাক ব্যক্তির মাঝে প্রথমদিকেই থাকবে যার নাম। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আর এসব গল্পের বেশিরভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যা কেন্দ্রিক। এসব গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু মুখরোচক মিথ্যা সে নিয়েও আছে নানা মত।

১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। পারিবারিক সূত্রেই ব্যবসায় ঢুকেছেন তিনি। অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বিস্কুট, এমবি ফিল্মস ইত্যাদি ছিল তার ব্যবসা। সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা আছে উপমহাদেশের বিখ্যাত বা কুখ্যাত ডন দাউদ ইব্রাহিমের সাথে। সময়ের সাথে সাথে কালো টাকা সাদা করার জন্যে আজিজ মোহাম্মদ ঢুকে পড়েন সিনেমার ব্যবসায়। শুরু করেন একের পর এক সিনেমা প্রযোজনা।

গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে প্রবেশের পর থেকেই নানা বিতর্কে মিডিয়ার ফোকাসে থাকা শুরু করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। নানা নায়িকার সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ আছে। এমনকি এক পত্রিকার সম্পাদক ও চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরিকে হত্যা করানোর অভিযোগ ওঠে আজিজের বিরুদ্ধে। শোনা যায়, সালশাহের মৃত্যুতেও তাঁর হাত আছে। কারণ একটি পার্টিতে সালমানের স্ত্রী সামিরাকে চুমু খাওয়ায় সবার সামনে আজিজ মোহাম্মদের গায়ে হাত তোলেন সালমান শাহ। সালমানের মৃত্যুর পর দুইবার এ নিয়ে আজিজকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

আজিজ মোহাম্মদের ভাতিজা আমিন ‘ইয়াবা সম্রাট’ হিসেবে খ্যাত। ২০১২ সালে আমিনের ৭৯ বছর জেল হয় মাদক মামলায়। শোনা যায় পেছন থেকে এই ব্যবসা আসলে আজিজ মোহাম্মদই চালাতেন।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ড প্রবাসী। তার স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে নিজেদের ব্যবসা দেখাশোনা করেন। তবে থাইল্যান্ডে থাকলেও আজিজের সাথে মিডিয়া তারকাদের ওঠাবসা কমে নি। অনেকেই তার আতিথেয়তা নিতে থাইল্যান্ড যাওয়া-আসা করেন। এভাবেই সবার চোখের আড়ালে থেকে নিজের প্রভাব ও ব্যবসা এখন চালিয়ে যাচ্ছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *