কেমন আছেন ওবায়দুল কাদের
সিঙ্গাপুরে ভালো আছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চিকিৎসা শেষে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বিদেশে অবস্থান করলেও তার মন পড়ে আছে দেশে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, রাজনীতি এবং তার প্রিয় দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছেন। দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি দেখে তার সময় কাটছে। শিগগিরই দেশে ফিরবেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য অধ্যাপক ডা. হারিসুল হককে সিঙ্গাপুরে পাঠান।
অধ্যাপক হারিসুল হক গত ১০ এপ্রিল সিঙ্গাপুর যান এবং ১৪ এপ্রিল দেশে ফিরে আসেন । আজ (সোমবার) তার অফিসে এসব কথা জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ৩ মার্চ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। একপর্যায়ে চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দিতে ঢাকায় আসেন ভারতের স্বনামধন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ মার্চ ওবায়দুল কাদেরকে ঢাকা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। এক মাস চিকিৎসা শেষে গত ৫ এপ্রিল সিঙ্গাপুর সময় বেলা ৩টায় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
সিঙ্গাপুরে সেতুমন্ত্রীকে দেখে এসে অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক জানান, বিএসএমএমইউ পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও নিউরো মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। আবু নাসার রিজভী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর সঙ্গেই সিঙ্গাপুরে যান এবং বর্তমানে তিনি তার পাশেই অবস্থান করছেন।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারিসুল হক জানান, ওবায়দুল কাদেরের বর্তমান হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি নিয়মিত (দু’বেলা) হাঁটাচলা করছেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তার চিকিৎসার বিষয়ে একটি ফলোআপ রয়েছে। তারপরই সিদ্ধান্ত হবে তিনি কবে দেশে ফিরবেন।
বর্তমানে তার দেশে ফেরার মতো অবস্থা রয়েছে। তবে চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের ডোজের অ্যাডজাসমেন্টের বা ওষুধের সঠিক ডোজ নিরূপণের জন্য আরও কিছুদিন সিঙ্গাপুরে থাকা প্রয়োজন এবং সে কারণেই তিনি এখনও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন- যোগ করেন তিনি।
অধ্যাপক হারিসুল হক আরও জানান, ওবায়দুল কাদের শুভ নববর্ষ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি নিজেই এ বিষয়ে একটি শুভেচ্ছা বাণী লিখে ফেলেন। তার হাতের লেখা খুবই সুন্দর। ভাষাগত দক্ষতাও মুগ্ধ করার মতো। অবাক করার মতো বিষয় হলো, বাংলাদেশ থেকে কেউ গেলে উল্টো তিনিই তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া হলো কিনা, কোনো সমস্যা আছে কিনা, পছন্দের খাবার কী কী, ইত্যাদি ইত্যাদি।
‘আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করলাম, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কথা-বার্তায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থা, অকৃত্রিম ও অসীম ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার প্রকাশ ঘটেছে। আওয়ামী লীগের জন্য এমন নিবেদিত প্রাণ নেতা সত্যিই বিরল।
ডা. হারিসুল হক আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে সিঙ্গুপরে অবস্থান করলেও দেশের মাটিতে তার মন পড়ে আছে। কোন সড়কের উন্নয়ন কাজ কবে শেষ করতে হবে, কোন কোন ব্রিজের কাজ কবে শেষ হবে- এসব তার মুখস্থ। তিনি অসম্ভব মেধাবী ও শক্তিশালী মনোভাবের। একই সঙ্গে তিনি বিরাট মন ও হৃদয়েরও অধিকারী। সিঙ্গাপুরের সব মানুষই তার যেন খুবই আপনজন। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীই তার প্রিয় আপন মানুষ।
দেশের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়েও খোঁজ-খবর রাখছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ের একটি ঘটনার বিষয়ে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপরাধীদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না। বর্তমান সরকার অপরাধীদের বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।