কৃমিমুক্ত রাখুন আপনার শিশুকে

স্টাফ রিপোর্ট

কৃমির আক্রমণ শিশু অপুষ্টির অন্যতম কারণ। শুধু শিশুরাই নয়, কৃমির কারণে বড়রাও অপুষ্টিতে ভোগে। বাংলাদেশে আয়রনের অভাবের কারণে রক্তস্বল্পতায় আক্রান্তের হার অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ হলো পেটে কৃমি। কৃমির আক্রমণে শিশুদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তস্বল্পতায় ভোগে।

এমনকি শিশুর মানসিক বৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই কৃমি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এ লক্ষ্যে সরকার ১ অক্টোবর থেকে ‘জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ’ ঘোষণা করেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও সরকারিভাবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে কৃমিনাশক ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

দূষিত পানি, দূষিত খাবার, নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন হাতের মাধ্যমে বেশির ভাগ কৃমির ডিম আমাদের অন্ত্রে প্রবেশ করে। সেখানে ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। বাচ্চাগুলো বড় হয়ে নিজেরা ডিম পাড়ে। এ ডিম মলের মাধ্যমে দেহের বাইরে বের হয়ে এসে পানিকে দূষিত করে।

নোংরা হাত ও মাছির সাহায্যে খাবারের মাধ্যমে অন্যকে আক্রান্ত করে। অনেক সময় খালি পায়ে হাঁটলে পায়ের চামড়া ছিদ্র করে কৃমি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। কৃমি মানুষের শরীরের ভেতরে বাস করে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে। এ জন্য অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। কৃমি প্রতিরোধ করার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই যথেষ্ট।

শিশুর হাতের নখ সব সময় ছোট রাখুন। শিশু যেন হাতের আঙুল মুখে না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। খাবার ঢেকে রাখুন। খাবারে মাছি বসলে সে খাবার শিশুকে খেতে দেবেন না। খাওয়ার আগে-পরে ও প্রসাব-পায়খানার পর শিশুর হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।

রান্নার আগে এবং শিশুকে খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। শিশুর প্লেট, বাটি, চামচসহ বাসনকোসন, রান্না করার পাত্র ট্যাপের পানিতে না ধুয়ে ফোটানো বিশুদ্ধ পানিতে ধুয়ে নিন। শিশুকে বিশুদ্ধ ও ফোটানো পানি পান করান।

শিশুকে মাছ-মাংস ও শাকসবজি ভালো করে সিদ্ধ করে খাওয়ান। শাকসবজি-ফলমূল পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। যেসব ফলমূল খোসা নেই সেগুলো খাওয়ার সময় খুব ভালো করে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুতে হবে। খোসাযুক্ত ফলমূল খাওয়ার আগে পরিষ্কার হাতে খোসা ছাড়িয়ে শিশুকে দিন।

শিশুকে বাইরের খাবার একেবারেই খেতে দেবেন না।  রাস্তার পাশে আখের রস, ফলমূলের রস, আগে থেকেই কেটে রাখা আনারস, তরমুজ, ঘোলসহ নানা পানীয় বিক্রি করে। এসব খেলে শুধু কৃমিই নয়, এতে আপনার শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুকে খালি পায়ে হাঁটা থেকে বিরত রাখুন। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করুন। শিশুকে জুতা পায়ে পায়খানা ব্যবহার করতে শিক্ষা দিন।

তিন মাস পর পর শিশুকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ান। সেই সঙ্গে পরিবারের সবাইকে কৃমিনাশক ওষুধ খেতে হবে। শিশু কৃমিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেবেনডাজল ১০০ মিলিগ্রামের একটা বড়ি ১২ ঘণ্টা পরপর তিনদিন বা অ্যালবেনডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম একটা বড়ি সেবন করাতে হবে। এর দু-তিন সপ্তাহ পর আরো একটি বড়ি খাওয়াতে হবে।

শুধু সরকারি পদক্ষেপই নয়, শিশুদের কৃমিমুক্ত রাখতে হলে মা-বাবাকেও সচেতন হতে হবে।

One thought on “কৃমিমুক্ত রাখুন আপনার শিশুকে

  • March 14, 2021 at 6:07 am
    Permalink

    I was able to find good information from your articles.

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *