কিছু কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করে বাজেটকে আরও সময়োপযোগি করা যাবে : ড. আতিউর রহমান
আমদানি-নির্ভরতা কমানোর চাপ এবং করোনা-পরবর্তি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অর্থায়নের জন্য বরাদ্দের চাহিদা- এ দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য করে একটি সতর্ক বাজেট আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত হয়েছে। নাগরিকদের আর্থসামাজিক সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রবৃদ্ধি সচল রাখার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এগিয়ে নেয়াটিই এ বাজেটের লক্ষ্য। তবে বাজেটের কিছু কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।”- বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। শনিবার (১১ জুন, ২০২২) ঢাকায় বাংলা মোটরে উন্নয়ন সমন্বয়ের বাজেট পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে মূল নিবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার লিড ইকোনমিস্ট রবার্ট শুভ্র গুদা, পলিসি অ্যানালিস্ট জিনিয়া শারমিন, অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দীন এবং সমাজতাত্ত্বিক খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
ড. আতিউর ঢালাওভাবে সকল কোম্পানির জন্য উৎসে কর বাড়ানো, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনে টেরওপর করবৃদ্ধি, এবং পাচারকরা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ রাখার যেপ্রস্তাবগুলো বাজেটে আছে সেগুলো অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি এ মূহুর্তে জরুরি নয় এমন ব্যয় আরও সঙ্কুচিত করে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাজেট আরও বাড়ানোর পক্ষে মত দেন। রবার্ট শুভ্র গুদা তার বক্তব্যে বলেনরবার্ট শুভ্র গুদা তার বক্তব্যে বলনে, নাগরিকরা স্বাস্থ্য সেবায় যা ব্যয় করেন তার দুই-তৃতীয়াংশ হয় মূলত ঔষধ কেনার জন্য। স্বাস্থ্য বাজেটের ঔষধ ও পচনশীল চিকিৎসা সামগ্রী উপখাতে বরাদ্দ মাত্র হাজার-বারোশো কোটি টাকা বাড়ালেই গ্রামাঞ্চলের মানুষের এ বাবদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসবে। অর্থমন্ত্রী জ্বালানি ও সারে র্ভতুকি প্রয়োজন বোধে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানোর কথা বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন। এই নীতি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হলে তা সকলের জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে মনে করনে জিনিয়া শারমনি।
ড. জামাল উদ্দিন কর-জিডিপির অনুপাত বাড়ানো এবং এনবিআর-এর রাজস্ব আহরণের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন যে, উপজেলা পর্যায় থেকে কার্যকরভাবে কর আহরণের কোন প্রস্তুতি এখন নেই। সমাপনী বক্তব্যে খন্দকার সাখাওয়াত আলী একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে নানামুখী টানাপোড়েনের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন করায় সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করেন এবং নাগরিকদের পক্ষ থেকে বাজেটের যেপর্যালোচনাগুলো হচ্ছে সেগুলো বাজেট চুড়ান্তকরণের আগে বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানান।