কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
পতন থেকে বেরিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২ অক্টোবর) কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে দেশের শেয়ারবাজারে। এ ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে বিমা খাত। বিমা খাতের প্রায় সবকটি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে কমেছে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ পররাষ্ট্র বিভাগ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষুণ্ন করেছে বা এজন্য দায়ী কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর ভিসানীতি দেওয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভিসানীতির আওতায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক বিরোধীদল।
যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির বিষয়টি জানানোর পর শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধনের আতঙ্ক দেখা দেয়। এতে দরপতনের মধ্যে পড়ে শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহজুড়ে দরপতন হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। লেনদেনের ২০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১২ পয়েন্ট কমে যায়। এতে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। তবে, দুপুর ১২টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলাতে থাকে।
চিত্র বদলাতে মূল ভূমিকা পালন করে বিমাখাত। এ খাতের একের পর এক কোম্পানি দাম কমার তালিকা থেকে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে থাকে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। ফলে দিনের লেনদেন শেষে দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকাই বড় হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৪৭টি। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় বিমা কোম্পানি আছে একটি।
বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৬৬ কোটি টাকা।
ঢাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৮৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফু-ওয়াং ফুডের ১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, জেমিনি সি ফুড, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪টির এবং ৫৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা।