কাঁচামালের দাম বাড়ায় হুমকিতে ক্ষুদ্র ব্যবসা
কভিড-১৯ মহামারীতে দাম বেড়েছে পণ্যের কাঁচামালের। কভিডজনিত প্রতিবন্ধকতা এ দাম বাড়াতে অবদান রেখেছে। কাঁচামালের উচ্চদামের কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে কাঁচামালের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছেন তারা। খবর এপি।
মহামারীর প্রাদুর্ভাবের কারণে পণ্যের কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য। সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা ও শ্রমবাজারে সংকটের কারণে পণ্য কবে বাজারে আসবে তা নিয়ে শঙ্কিত মালিকরাও। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়ায় অবস্থিত পেগি জিন্স পাইজের অন্যতম মালিক রেবেকা মিলার জানান, মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ শতাংশ দাম বেড়েছে পিক্যানের। এছাড়া ব্ল্যাকবেরি, কনডেন্সড মিল্ক ও ডিমের মূল্যও ঊর্ধ্বমুখী।
এ বিষয়ে মিলার বলেন, কাঁচামালের দাম বাড়ায় কর্মীদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন শ্রম বিভাগের তথ্য বলছে, বিদায়ী বছর ডিসেম্বরে এর আগের বছরের তুলনায় পণ্যের ৯ দশমিক ৭ শতাংশ পাইকারি মূল্য বেড়েছে।
এ বিষয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও শিল্পোদ্যোগ কাউন্সিলের প্রধান অর্থনীতিবিদ রে কিটিং বলেন, কল্পনাতীত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা জানি না কী হতে যাচ্ছে। বাজারে ভোক্তা চাহিদা বিদ্যমান। তবে সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রচুর প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এসবই কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। ফলে পণ্যের দাম বাড়ানোসহ কর্মঘণ্টাও কমাচ্ছে। এদিকে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখিতা কত দিন পর্যন্ত বহাল থাকবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বিশ্লেষকদের। এসব প্রতিকূলতার মাঝে ভবিষ্যতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
ফোমু আইসক্রিমের মালিক দিনা জালাল জানিয়েছেন, ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালানোর ব্যয় ১৫ শতাংশ বেড়েছে। ফলে পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে ফোমু। গত বছর যে পরিমাণ ব্যয় বেড়েছে, সে হিসেবে যেকোনো ব্যবসার টিকে থাকা অসম্ভব। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি হার না কমলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত এলিজাবেথ হোম ডিকোর অ্যান্ড ডিজাইনের মালিক এলিজাবেথ বেনেডিক্ট বলেন, সব ধরনের পণ্যের দাম ৭-৩০ শতাংশ বেড়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে পণ্যের।
এদিকে ই-কমার্স ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অফ রোড টেন্টসের মালিক জানলুকা জানান, ২০২০ সালের অক্টোবরে চীন থেকে একটি ৪০ ফুট কনটেইনারের জন্য ৬ হাজার ৩০০ ডলার মূল্য দিয়েছেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে এ ব্যয় ২৬ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। সে হিসেবে এক বছরে পণ্য পরিবহন ব্যয় প্রায় চার গুণ বেড়েছে।