কমছে সূর্যমুখী তেলের দাম

স্টাফ রিপোর্টার

ভোজ্যতেলের বাজারে সয়াবিন তেলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সূর্যমুখী তেল। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হলে ভোজ্যতেলের সরবরাহ চেইন সংকটে পড়ে। তাছাড়া যেহেতু যুদ্ধরত দুটি দেশই সূর্যমুখী তেলের সবচেয়ে বড় উৎপাদক ও রফতানিকারক, তাই স্বভাবতই বাজারে এর প্রভাব পড়ে। তবে বছরের শেষ দিকে এসে পরিস্থিতি বদলেছে। সরবরাহ ভালো হওয়ায় সূর্যমুখী তেল বিক্রেতারা প্রতিযোগিতামূলক দামে ছাড়ছেন তেল, কখনো কখনো সেই দাম সয়াবিন তেলের চেয়ে কম বা কাছাকাছি হয়ে পড়ছে।

এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আরো বেশি পরিমাণ সূর্যমুখীর তেল কিনতে আগ্রহী হবেন ভারত ও ইউরোপের মতো দেশগুলোর ক্রেতারা। ফলে সামনের দিনগুলোয় সূর্যমুখী তেল ক্রয়ের পরিমাণ বাড়বে, দামের কারণে কমবে সয়াবিন তেলের দাম।

ইন্টারন্যাশনাল সানফ্লাওয়ার অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সন্দীপ বাজোরিয়া বলেন, প্রতিযোগিতামূলক দাম হওয়ার পর থেকেই সূর্যমুখীর তেল বিক্রি বেড়েছে। আগে বেশি দামে বিক্রি হলেও এখন সয়াবিন তেলের তুলনায় ছাড়কৃত দামে এ তেল পাওয়া যাচ্ছে।

চলতি বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে সয়াবিনের তুলনায় সূর্যমুখীর তেলের দাম বেড়ে যায়। কারণ সে সময় কৃষ্ণসাগরীয় এলাকা দিয়ে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছিল। এ সপ্তাহের শুরুতে সয়াবিন তেলের তুলনায় প্রতি টনে প্রায় ১০০ ডলার কমে যায় সূর্যমুখী তেলের দাম, যা গত ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ।

সম্প্রতি ভারতে অপরিশোধিত সূর্যমুখী তেলের দাম টনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে দামের পাশাপাশি বীমা ও পরিবহন খরচও যুক্ত রয়েছে। একই সময়ে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের এ পরিমাণের দাম ছিল ১ হাজার ৩২০ ডলার।

রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই সর্বোচ্চ পরিমাণ সূর্যমুখীর তেল উৎপাদন ও রফতানি করে। সম্প্রতি রাশিয়ায় সূর্যমুখীর বীজ ভাঙিয়ে তেল তৈরির প্রক্রিয়া আগের গতিতে ফিরছে। যার কারণে আগের চেয়ে প্রতিযোগিতামূলক দামে এ তেল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। একই সময়ে ইউক্রেনের বিক্রেতারাও নিরাপদ করিডোর ব্যবহার করে মজুদ থাকা তেল বিক্রি করে দিচ্ছেন। এছাড়া চলতি মৌসুমেও রাশিয়া ও ইউক্রেনে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। সে ফসল থেকে পাওয়া তেলও রয়েছে। যার কারণে সূর্যমুখী তেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।

ভারতীয় সূত্র বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সূর্যমুখী তেল আমদানিকারক দেশ ভারত ডিসেম্বরের মধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করবে। নভেম্বরে যা ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টন, অক্টোবরে ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৪ টন।

মুম্বাইভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক মাস আগে সরবরাহ ছিল খুবই সীমিত। এখন কেবল রাশিয়া ও ইউক্রেনই নয়; তুরস্ক ও আর্জেন্টিনাও তেল সরবরাহ করতে প্রস্তাব দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *