কপাল খুলছে পাটকল শ্রমিকদের

আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও ঈদ বোনাসের জন্য দেশের ২৬টি পাটকলে প্রায় ১৬৯ কোটি টাকা প্রদান করেছে সরকার। এর মধ্যে ৪৪ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা খুলনা যশোর অঞ্চলের ৯টি পাটকলের জন্য দেয়া হয়েছে।

বুধবার বিকেলে খুলনা ও যশোর অঞ্চলে ৯ পাটকলের স্ব-স্ব একাউন্টে পে-অর্ডার করেছে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন। আজ বৃহস্পতিবার মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে এ অর্থ জমা দেবে।

এদিকে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি, উৎসব বোনাস প্রদান করা হলেও মিলের কর্মকর্তাদের ৫ মাসের বেতন ও উৎসব বোনাসের বিষয়ে বিজেএমসি কোনো আদেশ জারি করেনি। এতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হতাশ হয়ে বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতি পালন করেছেন। এ সময় ৯ মিলের কর্মকর্তরা খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে এক প্রকার অবরুদ্ধ করে রাখেন। বেতন ও বোনাস হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তারা কলম বিরতি ও কর্ম বিরতির হুঁশিয়ারি প্রদান করেছেন।

বাংলাদেশ পাট শিল্প কর্মকর্তা সমিতির উদ্যোগে ৯ মিলের কর্মকর্তারা সকাল ৯টা থেকে কলম বিরতি শুরু করেন। পরে সমিতির সভাপতি নন্দন দাসের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তৃতা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক কালাম মল্লিক, নাজমুল কবির, মো. কামাল হোসেন, দিপংকর কুন্ডু, মনজুরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মানাজির রহমান, সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস ও নাইমুর রহমান আশা। এ সময় তারা কর্মকর্তাদের বেতন বোনাসের দাবিতে আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেনের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।

অন্যদিকে বিজেএমসি সূত্র মোতাবেক, বাংলাদেশের ২৬ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও ঈদ বোনাস প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে গত সোমবার দুপুরে এ বরাদ্দ ছাড় দেয়া হয়। এর মধ্যে খুলনা যশোর অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের জন্য ৪৪ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার বিকেলে খুলনা যশোর অঞ্চলের পাটকলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৃথক পৃথকভাবে পে-অর্ডার পাঠিয়েছে। এই অর্থের মধ্যে খালিশপুরের প্লাটিনামের ৯ কোটি ৮১ লাখ ৭৩ হাজার, ক্রিসেন্টের ১১ কোটি ৯১ হাজার, (আজ আরো তিন সপ্তাহের মজুরি আসার কথা রয়েছে), খালিশপুরের ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৩ হাজার, দৌলতপুরের ৫৫ লাখ ৩০ হাজার, দিঘলিয়ার স্টার ৭ কোটি ৬১ লাখ ৭৭ হাজার, আটরা এলাকার আলীম ২ কোটি ৬৪ লাথ ৬০ হাজার, ইস্টার্ন ১ কোটি ৪৪ লাখ ৬৫ হাজার, নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার কার্পেটিং ১ কোটি ৫৭ হাজার ও জেজেআই পাবে ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই অর্থ শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দিতে হবে বলেও শর্ত আরোপ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *