এশিয়ার দেশগুলোয় এলএনজি আমদানি ঊর্ধ্বমুখী

স্টাফ রিপোর্টার

এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী। তা সত্ত্বেও ইউরোপ থেকে এশিয়ার দেশগুলোয় পণ্যটির রফতানি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। এমনকি জুলাইয়ে আমদানি বেড়ে গত ছয় মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানায়। খবর রয়টার্স।

কেপলারের সংকলিত তথ্যানুযায়ী, শীর্ষ আমদানিকারক অঞ্চল এশিয়ার দেশগুলোর জুলাইয়ে মোট এলএনজি আমদানি দাঁড়াতে পারে ২ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টনে। জুনে এ পরিমাণ ছিল ২ কোটি ২৬ লাখ টন। জানুয়ারিতে এশিয়ার দেশগুলো মোট ২ কোটি ৬১ লাখ ৯০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল।

তবে এশিয়ার দেশগুলোয় বাড়লেও ইউরোপের দেশগুলোয় এলএনজি আমদানি দিনদিন কমছে। কেপলারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে এ অঞ্চলের দেশগুলো ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন। জুনে ইউরোপের দেশগুলো মোট ৭২ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল।

ইউরোপের এলএনজি আমদানি গত ডিসেম্বরের পর থেকে প্রতি মাসে কমছে। সে সময় দেশগুলো মোট ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ার স্পট মার্কেটে ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে বৈশ্বিক এলএনজি আমদানি প্রবাহে পরিবর্তন হয়েছে। চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় সেপ্টেম্বরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১২ ডলার, গত সপ্তাহে যা ছিল ১২ ডলার ২০ সেন্ট। গত সপ্তাহের তুলনায় পণ্যটির দাম কমলেও কয়েক মাস ধরে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ১২ ডলার বা তার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত ২১ জুন শুরু হওয়া সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১২ ডলার ৬০ সেন্ট, যা গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে সর্বোচ্চ।

বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক দেশ চীন। কেপলার জানায়, জুলাইয়ে দেশটি মোট ৬৪ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা গত এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। জুনে দেশটি ৫৮ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছিল।

জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক দেশ। দেশটির প্রধান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় সম্প্রতি এলএনজির মজুদ বাড়লেও জুলাইয়ে এ দেশেও আমদানি বাড়বে। কেপলার জানায়, এ সময় দেশটি মোট ৫৬ লাখ ২০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা গত মার্চের পর সর্বোচ্চ। জুনে এ পরিমাণ ছিল ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টন।

এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক দেশ ভারত। কেপলারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুলাইয়ে দেশটি ২৬ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা ২০২০ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। জুনে দেশটির এলএনজি আমদানির পরিমাণ ছিল ২৬ লাখ টন।

ইউরোপ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকেও এশিয়ার এলএনজি আমদানি বাড়তে পারে। কেপলারের সংকলিত ডাটা অনুযায়ী, জুলাইয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকে এশিয়ার দেশগুলো ৩৪ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করতে পারে, যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর রেকর্ড সর্বোচ্চ। জুনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এশিয়ার দেশগুলো ২৭ লাখ ১০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করছিল। এছাড়া কাতার থেকে এশিয়ার দেশগুলোর এলএনজি আমদানি ৬০ লাখ ৯০ হাজার টন হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, জুনে যা ছিল ৫২ লাখ ৩০ হাজার টন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *