এলসিবিহীন কাঁচামাল আমদানি করতে চায় বিকেএমইএ

স্টাফ রিপোর্টার

এলসিবিহীন বা ফ্রি অব কস্ট (এফওসি) কাঁচামাল আমদানির সুযোগ অবারিত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। সংগঠনটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাতেমের সই করা চিঠি সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে সংগঠনটি জানায়, সাধারণত রপ্তানিমুখী নন-বন্ডেড তৈরি পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র বা এলসির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সুতা/কাপড়/এক্সেসরিজ সংগ্রহ করে থাকে। পাশাপাশি বন্ডেড ফ্যাক্টরিগুলো স্থানীয়ভাবে ও বিদেশ থেকে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে সুতা/কাপড়/ এক্সেসরিজ আমদানি করে থাকে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসির কারণে দেশীয় উৎস থেকে সংগ্রহের পরিবর্তে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ উত্তরোত্তর বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় ব্যাক টু ব্যাকের পাশাপাশি এলসিবিহীন বা ফ্রি অব কস্টে (এফওসি) কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ বাড়ছে। এ ধরনের রপ্তানির ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন ১০০ শতাংশ অর্থাৎ অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পুরোটাই দেশে থাকে।

এ সুবিধাকে রপ্তানিকারকের জন্য নিরাপদ উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, এর ফলে রপ্তানিকারকের ব্যাক টু ব্যাক এলসি করার জন্য ব্যাংকে কোনো লিমিট বা সিকিউরিটি মর্গেজ প্রয়োজন হয় না। ক্রেতা তার নিজ খরচেই সব প্রকার কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকে। ফলে এ ধরনের ক্রয়াদেশ বাতিল, ডিসকাউন্ট বা এয়ার শিপমেন্ট করে রপ্তানিকারকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

পদ্ধতিটিকে অবারিত করা প্রয়োজন জানিয়ে সংগঠনটি জানায়, কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কিছু নিয়ম এ পদ্ধতিকে জটিল করে রেখেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের রপ্তানি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

চিঠিতে বলা হয়, দুটি এসআরও-তে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানকে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র ছাড়া শুধু ক্রেতা কর্তৃক চুক্তির বিপরীতে ছয় মাসের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও অনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদি রিভলভিং পদ্ধতিতে আমদানি করতে পারা। এছাড়া কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান যদি তার রপ্তানিপণ্য উৎপাদনে ব্যবহার্য প্রায় সব কাঁচামাল (প্রয়োজনীয় মোট কাঁচামালের ৮০ শতাংশ ওপরে) তার বৈদেশিক ক্রেতা অথবা ক্রেতার মনোনীত কোনো বৈদেশিক এজেন্টের কাছ থেকে বিনামূল্যে পেয়ে থাকে এবং রপ্তানিমূল্য হিসেবে শুধু কাটিং, মেকিং ট্রিমিং (সিএমটি) প্রাপ্ত হয়, সেসব প্রতিষ্ঠানই অনধিক ছয় মাসের কাঁচামাল রিভলভিং পদ্ধতিতে আমদানি করতে পারবে।

এসব শর্তের কারণে রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, রপ্তানিকারকরা বৈদেশিক ক্রেতা হারাচ্ছে। এমতাবস্থায় দেশের রপ্তানির বৃহৎ স্বার্থে তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এই সুবিধা গ্রহণের ফলে ক্রয়াদেশ বাড়ে। রপ্তানিকারকরা উপকৃত হয়। এনবিআরের এসআরও-এর কারণে রপ্তানিকারকরা সমান সুযোগ পায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *