এবার জেআরসির বৈঠকও বাতিল করল বাংলাদেশ

একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক। কাল বুধবার থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে দুই দিনের বৈঠকটি শুরুর কথা ছিল। মূলত অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয় নিয়ে বার্ষিক এই বৈঠকে এবার পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে ছয়টি অভিন্ন নদীর হালনাগাদ করা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। ওই আলোচনার ভিত্তিতে দুই দেশ ছয়টি অভিন্ন নদীর রূপরেখা চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি নিত।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনীতিক সূত্রগুলো মঙ্গলবার জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকটি স্থগিত হয়ে গেছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সফরের অনুমতি ছিল না। বিশেষ করে ওই বৈঠক যে বুধবার শুরু হচ্ছে না সেটি প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সফরের পর জেআরসির বৈঠকটি বাতিল হলো। ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিলকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের দুই মন্ত্রীর সফর বাতিল করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পর্যন্ত জেআরসি প্রতিনিধি দলের সফরের অনুমতি না আসায় স্পষ্ট হয়ে যায় দিল্লির বৈঠক হচ্ছে না।

এ নিয়ে জানতে চাইলে জেআরসির সদস্য কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, দিল্লিতে বুধবার থেকে প্রস্তাবিত বৈঠকটি স্থগিত হয়ে গেছে। দুই পক্ষ আলোচনা করে বৈঠকের পরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।

তিনি জানান, বৈঠকে দুই দেশের সচিবদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী, ও দুধকুমার এ ছয়টি নদীর হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের কথা ছিল। জেআরসির প্রস্তাবিত বৈঠকের প্রথম দিনে যৌথ কমিটির ও দ্বিতীয় দিন কারিগরি কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। দ্রুত ওই ছয়টি নদীর রূপরেখা চুক্তি চূড়ান্ত করতে তথ্যগুলো বিনিময়ের পরিকল্পনা রয়েছে। গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পানিসম্পদ সচিবদের বৈঠকে তিস্তা ও ফেনীর পাশাপাশি ওই ছয়টি নদীর তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

যৌথ নদী কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার এ ছয়টি নদীর প্রবাহ একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় করেছিল। তখন থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী ছয়টি নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *