এক বছরের কিস্তিতে ৫৭৫ কোটি টাকা দিতে চায় গ্রামীণফোন

নিরীক্ষা দাবির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে পরিশোধের যে নির্দেশ আপিল বিভাগ দিয়েছেন, তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। গতকাল আপিল বিভাগে করা ওই আবেদনে ১২ মাসের কিস্তিতে ৫৭৫ কোটি টাকা প্রদানের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে অপারেটরটি।

গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের সার্টিফায়েড কপি পেয়েছি আমরা। রিভিউ করতে হয় ৩০ দিনের মধ্যে। গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়টি সদয় পুনর্বিবেচনার জন্য রোববার আপিল বিভাগে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে গ্রামীণফোন। আবেদনে বিটিআরসির ত্রুটিপূর্ণ অডিটের ভিত্তিতে দাবি করা মূল টাকার ২৫ শতাংশ বা প্রায় ৫৭৫ কোটি টাকা সমান ১২টি মাসিক কিস্তিতে জমা দেয়ার সুযোগ দিতে আবেদন করেছি।

তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী টাকা পরিশোধের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় ছিল গ্রামীণফোনের। আগেই যেন বিষয়টির একটি সুরাহা হয়, সেজন্য আগেই আবেদন করেছি আমরা।’

জানা গেছে, নিরীক্ষা আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটির মধ্যে বিটিআরসির দাবি ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা ও বাকি ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা বিলম্ব ফি ও সুদ। এর বাইরে ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা পাবে এনবিআর। গ্রামীণফোন মূল পাওনার ২৫ শতাংশ হিসেবে প্রায় ৫৭৫ কোটি টাকা জমা দেয়ার অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার পাশাপাশি রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। একাধিকবার তাগাদা দিয়ে অর্থ আদায় করতে না পেরে বিটিআরসি লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে দুই অপারেটরকে নোটিস পাঠায়। বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় দুই অপারেটর আদালতের দ্বারস্থ হয়। পরে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হলেও তাতে সফলতা আসেনি।

গ্রামীণফোনের আবেদনে গত ১৭ অক্টোবর বিটিআরসির নিরীক্ষা আপত্তি দাবির নোটিসের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *