একাই লড়ছেন মুশফিক

অভিজ্ঞতার মূল্য এখানেই। ভারতীয় পেস তোপের মুখে গোলাপি বলে যখন গতি, বাউন্স আর সুইংয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপ, ১৩ রানে যখন ৪ জন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেন সাজঘরে, তখনই দলের হাল ধরলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম।

তার অপরাজিত ৫৯ রানের ওপর ভর করে দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ এখনও ম্যাচে টিকে আছে। সবচেয়ে বড় কথা, যখন দ্বিতীয় দিনেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার একটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, তখন মুশফিকের ব্যাটেই ইডেন টেস্ট ম্যাচটা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫২। ইনিংস পরাজয় এড়াতে হলে এখনও ৮৯ রান করতে হবে টাইগারদের। তৃতীয় দিন কি করতে পারে বাংলাদেশ সেটাই দেখার বিষয়।

একের পর এক উইকেট পতন। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও কি বাংলাদেশের ইনিংস বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়বে? এমন শঙ্কা যখন দেখা দিল, তখনই ইনিংসের হাল ধরার চেষ্টা করেন দুই ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহীম।

১৩ রানে ৪ উইকেট থেকে এ দু’জনের ৬৯ রানের জুটি বাংলাদেশকে আশার আলো দেখাতে শুরু করে। কিন্তু ৮২ রানের মাথায় রান নিতে গিয়ে ডান পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে রিয়াদের।

ফলে ৩৯ রান করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। এরপর মাঠে নামেন প্রথম ইনিংসে লিটন দাসের কনকাশন মেহেদী হাসান মিরাজ। মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়েন মিরাজ। এরপর ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হয়ে যান তিনি।

এরপর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে জুটি গড়েন মুশফিক। কিন্তু এই জুটি খুব বড় হতে পারেনি। মাত্র ১৯ রানের জুটি ভেঙে যায় উমেষ যাদবের বলে আজিঙ্কা রাহানের হাতে তাইজুলের ক্যাচ তুলে দেয়ার পর। ২৪ বল খেলে ১১ রান করে ফিরে যান তাইজুল। তার আগেই ক্যারিয়ারের ২১তম টেস্ট ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। তাও মাত্র ৫৪ বলে।

এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুকেই প্রথম ইনিংসের করুণ দশা দেখা দেয়। ইডেন গার্ডেনে ফ্ল্যাড লাইটের আলোয় গোলাপি বলে যে বাংলাদেশ নিজেদের একেবারেই খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না, সেটা ভালো করেই বোঝা যাচ্ছিল।

প্রথম ইনিংসে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর মাত্র ১০৬ রানে অলআউট মুমিনুল হকের দল। জবাব দিতে নেমে ভারত বিরাট কোহলির সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৩৪৭ রানেই ইনিংস ঘোষণা করে।

২৪১ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না করেই, প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ইশান্ত শর্মার হাতে এলবিডব্লিউর শিকার হন ওপেনার সাদমান ইসলাম।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে স্কোরবোর্ডে ২ রান যোগ হওয়ার পর ব্যক্তিগত শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক মুমিনুল হক। মাত্র ৬ বল খেলার পর কোনো রান না করেই ফিরে গেলেন মুমিনুল।

মোহাম্মদ মিঠুন আর ইমরুল কায়েস চেষ্টা করেন ম্যাচটা ধরে রাখার। কিন্তু মাত্র ৭ রানে জুটি গড়েন এ দু’জন। দলীয় ৯ রানের মাথায় ফিরে যান মিঠুন। ১২ বলে ৬ রান করে তিনি। দলীয় ১৩ রানের মাথায় ফিরে গেলেন ইমরুল কায়েসও। ১৫ বলে ৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

ভারতীয় বোলার ইশান্ত শর্মা প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও বিধ্বংসী। ৩৯ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ৪ উইকেট। ২ উইকেট নেন উমেষ যাদব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *