একদিন পিছিয়ে হেমন্তের শুরু

আজ ১ কার্তিক (নতুন বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী), শুরু হলো ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এ দুই মাসে এই ঋতু। আগের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আজ ২ কার্তিক। ফলে এবার একদিন পর শুরু হলো হেমন্তের।

কারণ, বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার করেছে সরকার। ফলে এ বছর আশ্বিন মাস আসে ৩১ দিন নিয়ে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- ভাষা দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের বাংলা ও ইংরেজি তারিখের মিল রাখতে বাংলা বর্ষপঞ্জির কার্তিক মাস এবার কাগজে-কলমে শুরু হলো আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে।

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক (গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ) মোবারক হোসেন বলছিলেন, পুরনো নিয়মে বৈশাখ থেকে ভাদ্র- এই পাঁচ মাস গণনা করা হতো ৩১ দিনে। আশ্বিন থেকে চৈত্র- সাত মাস হতো ৩০ দিনে। তবে ইংরেজি লিপইয়ারে ফাল্গুনে মাস ৩১ দিনে হতো। এখন নতুন নিয়মে বৈশাখ থেকে আশ্বিন- প্রথম ছয় মাস ৩১ দিনে হবে। কার্তিক, অগ্রাহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও চৈত্র- এই ৫ মাস ৩০ দিনে হিসাব করা হবে। ফাল্গুন মাস হিসাব করা হবে ২৯ দিনে। ইংরেজি লিপইয়ারের বছর এক দিন বেড়ে ফাল্গুন হবে ৩০ দিনে।

এ সংস্কারের কারণ কী?

মোবারক হোসেন বলেন, এটা করা হলো বিভিন্ন রকম দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। নতুন ক্যালেন্ডারে আগামী ১০০ বছর মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস বাংলাবর্ষের যে তারিখে ঘটেছে, ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে তার হেরফের হবে না।

বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের দিনটি ছিল বাংলা বর্ষপঞ্জির ৮ ফাল্গুন। কিন্তু এখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পালনের দিনটি বাংলা বর্ষপঞ্জির ৯ ফাল্গুন হয়। তাই ২০২০ সাল থেকে শহীদ দিবস ও আন্তর্জতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি হবে বাংলা সনের ৮ ফাল্গুন।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটি ছিল অনিচ্ছাকৃত ভুল। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরই আগের আদেশটি প্রত্যাহার করি। বাংলা একাডেমির সুপারিশ অনুযায়ী, এটি সংশোধন করে ফের জারি করা হয়েছে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছিল ১ পৌষ। কিন্তু এখন ১৬ ডিসেম্বরের দিন হয় ২ পৌষ। সংস্কারের কারণে এখন থেকে ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ১ পৌষে।

পরিবর্তিত বর্ষপঞ্জিতে বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস ৩১ দিনে, কার্তিক থেকে মাঘ এবং চৈত্র মাস ৩০ দিনে গণনা করা হবে।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জির তারিখগুলোর সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এসব সংস্কার আনা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *