ঋণমান কমাল মুডিস বাংলাদেশে, ব্যাংক খাত নিয়ে শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়েছে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস। আগে ঋণমান ছিল ‘বি-ওয়ান’ এখন তা নেমে এসেছে ‘বি-টু’ পর্যায়ে। এতে দেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ হয়ে গেছে।

বুধবার (১২ মার্চ) প্রকাশিত মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মানের অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

চারটি কারণে রেটিং কমিয়েছে মুডিস। সংস্থাটির মতে, অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি বাড়ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি চরমে পৌঁছেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, পোশাক খাতের সরবরাহ শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা হ্রাস অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হয়ে উঠছে।

অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ মাসের ব্যবধানে নীতিগত সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছে। তবে ২০২৫ সালেও মূল্যস্ফীতি উচ্চমাত্রায়, প্রায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশে থাকার আশঙ্কা করছে মুডিস।

মুডিস জানায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমছে। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৫ শতাংশ হতে পারে, যা আগের বছরের ৫.৮ শতাংশের তুলনায় কম। মূল্যস্ফীতি বেশি থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। সংস্থার মতে, ২০২৫ সালে প্রায় ৯.৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হতে পারে।

ব্যাংকগুলোর সমস্যা বাড়ছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ১৭ শতাংশ, যা ৯ মাস আগে ৯ শতাংশ ছিল।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন পরিস্থিতি নেতিবাচক (-২.৫ শতাংশ), যা বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় নিচে। সরকার নতুন করে টাকা না দিলে এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ কমাতে ২০২৫ সালের এপ্রিলে কঠোর নিয়ম আসছে। তারল্য সংকট এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সহায়তা দেবে।

ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হতে পারে। পণ্যের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। ব্যবসায় বিনিয়োগ কমতে পারে। চাকরি বাজারে প্রভাব পড়তে পারে।

মুডিস বলছে, দেশের ব্যাংক খাত এখন কঠিন সময় পার করছে। সরকারের সহায়তা ছাড়া ব্যাংকগুলোর জন্য সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *