ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ’র

স্টাফ রিপোর্টার

ইসরায়েলে হামলার জেরে ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ বিষয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন। আর ইইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে তাদের জোট।

গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।

ইসরায়েল এখন পর্যন্ত ইরানের এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মিত্র ৩২ দেশকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

গত বছরের অক্টোবরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে। দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে সীমিত করার জন্য যে বিস্তৃত চুক্তি হয়েছিল, তার সাথে সম্পর্কিত ছিল এই নিষেধাজ্ঞাগুলো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে পূর্বের নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে এবং নতুন কিছু নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করেছে।

ইরানের একটি প্রধান সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি হলো ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তকমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে এটি করলেও যুক্তরাজ্য এখনো তা করেনি।

গত মঙ্গলবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি ইয়েলেন বলেছেন, আমি আশাবাদী, আগামী দিনগুলোতে আমরা ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবো। আমরা নিষেধাজ্ঞার টুলসগুলো প্রাক্-নিরীক্ষণ করিনি। কিন্তু ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়ন ব্যাহত করার সব উপায়ই আলোচনার টেবিলে‌ থাকবে।

‘ইরানের তেল রপ্তানি একটি সম্ভাব্য ক্ষেত্র, যা আমরা খতিয়ে দেখতে পারি’ যোগ করে তিনি বলেন, ইরান কিছু তেল রপ্তানি করছে। সেখানেও আমরা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি।

ইয়েলেন বলেন, ইরানকে বিচ্ছিন্ন করে প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে তার অর্থায়ন করার ও ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাগুলো ব্যবহার করেছে। এতে পাঁচ শতাধিকেরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন কর্মসূচির পাশাপাশি দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করবে।

তিনি বলেন, আশা করি, আমাদের মিত্র এবং অংশীদাররা শিগগির তাদের নিজস্ব নিষেধাজ্ঞাগুলো বাস্তবায়ন করবে। এসব নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য পদক্ষেপ ইরানের সামরিক সক্ষমতা এবং কার্যকারিতাকে দুর্বল করতে এবং এর সমস্যাজনক আচরণ মোকাবিলায় চাপ জারি রাখবে।

ইইউ’র শীর্ষ কূটনীতিক বোরেল বলেছেন, জোটের কিছু সদস্য দেশ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়াতে বলেছে। ‘নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কাজ শুরুর জন্য’ ইইউ’র কূটনৈতিক সার্ভিসের কাছে অনুরোধ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *