ইরানি তেলবাহী জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

লোহিত সাগরের সৌদি উপকূলীয় জেদ্দা সমুদ্রবন্দরের কাছে ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি ট্যাংকারে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানির (এনআইওসি) মালিকানাধীন দ্য স্যাবিট নামে একটি তেলের ট্যাংকারে শুক্রবারের হামলায় এতে আগুন ধরে যায়। ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ও সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর রয়টার্স, বিবিসি।

জেদ্দা বন্দর থেকে ৯৬ কিলোমিটার দূরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয় জাহাজটি। এতে জাহাজটির দুটি প্রধান স্টোরেজ ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেখান থেকে সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পড়ে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও দুবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি স্বীকার করা হয়, তবে তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো থেকে বিরত থাকে।

লোহিত সাগর ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে আবারো তেলের ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় দুই প্রতিবেশী ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরো চড়বে। ওই এলাকায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর নৌবহর ‘পঞ্চম নৌবহর’ থেকে ইরানের এ দাবি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার কথা জানালেও তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি।

ইরানের জাতীয় ট্যাংকার কোম্পানি এনআইটিসির এক কর্মকর্তা শুক্রবার সকালে ওই জাহাজে হামলার কথা নিশ্চিত করেন এবং এতে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতার দিকে ইঙ্গিত দেন। এদিকে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সবার জন্য উন্মুক্ত শিপ ট্র্যাকিং রেকর্ডে দেখা গেছে, জাহাজটি বর্তমানে লোহিত সাগরে অবস্থান করছে।

ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংবাদটি এল। গত মাসে সৌদি আরবের একটি প্রধান তেলক্ষেত্র ও প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় ১৮টি ড্রোন ও সাতটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল। হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করে সৌদি আরব। তবে তা অস্বীকার করে তেহরান।

গত মে ও জুন মাসে উপসাগরীয় এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকারে বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। শুক্রবার ইরানি তেলের ট্যাংকারে হামলার খবর প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ২ শতাংশ বেড়ে গেছে।

তেল ও অন্যান্য বাণিজ্যের জন্য লোহিত সাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচিত। এর মাধ্যমে সুয়েজ খাল হয়ে ভারত মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।

তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে তীব্র বাদানুবাদে জড়িত ওয়াশিংটন। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে আসায় উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। গত কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *