ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীতে বিনিয়োগ করবে মালয়েশিয়া

স্টাফ রিপোর্টার

ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানী নুসানতারা শহর উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে মালয়েশিয়া। ইন্দোনেশিয়া সফরকালীন সোমবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বোর্নিও দ্বীপে অবস্থিত দেশটির নতুন রাজধানীর উন্নয়নে যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করার ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আনোয়ার ইব্রাহিম ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার অর্থনৈতিক সহযোগিতার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। খবর এপি।

রোববার একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জাকার্তায় পৌঁছান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের নভেম্বরে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এটাই প্রথম বিদেশ সফর আনোয়ার ইব্রাহিমের। তিনি বলেন, অন্তত ১০টি মালয়েশিয়ান কোম্পানি নুসানতারাতে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নুসানতারা শহরটি মালয়েশিয়ার সাবাহ ও সারাওয়াক রাজ্য এবং বোর্নিও দ্বীপের ফেডারেল অঞ্চলগুলোর একদম নিকটে। এজন্য নতুন রাজধানী শহরটির উন্নয়ন হলে মালয়েশিয়ার এসব অঞ্চলের অর্থনীতির জন্য সহায়ক হবে।

২০১৯ সালে জাকার্তার পরিবর্তে নুসানতারা শহরকে রাজধানী করার সিদ্ধান্ত নেয় ইন্দোনেশিয়া। প্রায় এক কোটি জনসংখ্যার জাকার্তা শহরটি পরিবেশগত অবনতি ও অত্যধিক ঘনবসতির কারণে ডুবতে বসেছে। এর প্রধান কারণ জাভা সাগরের জলস্তর বৃদ্ধি ও ভূগর্ভস্থ জলের অনিয়ন্ত্রিত নিষ্কাশন। ২০২২ সালের মার্চ থেকে শহরটি উন্নয়নের প্রথম ধাপ শুরু হয় এবং ২০৪৫ সালে এটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সফরে যৌথ উন্নয়ন চুক্তি ছাড়াও উভয় পক্ষের মধ্যে স্থল ও সমুদ্র সীমান্তের সীমানা নির্ধারণ, মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়। কেননা দেশটিতে দীর্ঘকাল ধরে মানব পাচার ও অভিবাসী শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন ইন্দোনেশিয়ানরা। ইন্দোনেশিয়ার সরকারি তথ্য বলছে, বিদেশে কর্মরত ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি লোক মালয়েশিয়ায় আছে। ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

উভয় দেশের নেতা পাম অয়েল রফতানির বিষয়ে যৌথ প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করেন। বিশ্বের ৮৫ শতাংশ পাম অয়েল উত্পাদন করে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। এর মাধ্যমে এ দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

আনোয়ার ইব্রাহিম ইন্দোনেশিয়ায় গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন নেতা হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তিনি এর আগে উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তিনি পদ থেকে বরখাস্ত হন এবং নব্বইয়ের দশকে কারাগারে বন্দি ছিলেন। ফলে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও একটি সংস্কার আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। এর পরই ইব্রাহিমের দলটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার হূদয়ে ইন্দোনেশিয়ার বিশেষ স্থান রয়েছে। আমি এক কঠিন পরিস্থিতিতে ছিলাম। ইন্দোনেশিয়া আমাকে সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *