আরো কমল সুতার দাম
দেশের বৃহত্তম পাইকারি সুতার মোকাম নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার দাম আরেক দফা কমেছে। দু-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সব কাউন্টের সুতার দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ৮-১২ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে সুতার কাঁচামালের দাম এবং দেশের বাজারে কাপড় উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে সুতার চাহিদা কমেছে। আর এর প্রভাবে কমেছে সুতার দাম।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছরই গড় সিজনে সুতার দাম একটু কমতির দিকে থাকে। রমজান মাসের আগে বাজারে কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায়। সে সময় বাজারে সুতার দামও বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে সুতার চাহিদা তুলনামূলক কিছুটা কম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৩৮-৬৫ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল ৪০-৭০ টাকা পাউন্ড। ফলে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ৫ টাকা।
২০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ৬০-৭০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ১০ টাকা।
২৪, ২৬, ২৮, ৩০ কাউন্টের এক্সপোর্ট কোয়ালিটির সুতা প্রকারভেদে বেচাকেনা হচ্ছে ১২২-১৩৫ টাকা পাউন্ড দরে, যা ২০ দিন আগেও ছিল ১২৭-১৩৮ টাকা। সে হিসাবে পাউন্ডপ্রতি দাম কমেছে ৫-৭ টাকা।
৪০ কাউন্টের সুতা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে (বাইন) ১৬০-১৭০ টাকা, যা কয়েক সপ্তাহ আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ১০ টাকা।
৫০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ১৯০-২১০ টাকা পাউন্ড দরে, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২০০-২১৮ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ৮-১০ টাকা।
৬০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি প্রকারভেদে ১৮০-২২০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৯০-২২৫ টাকা। ৮০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা পাউন্ড দরে।
বাংলাদেশ ইয়ান মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লিটন সাহা জানান, এক মাসের ব্যবধানে সব কাউন্টের সুতার দাম বাজারে ১০-১২ টাকা কমেছে। বাজারে বেচাকেনা খুবই খারাপ। সুতার চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুতার মোকাম গড়ে ওঠায় মফস্বলের পাইকারা আর আগের মতো টানবাজারে আসছে না। ফলে কোটি কোটি টাকা মূলধন খাটিয়ে ব্যবসায়ীদের লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কাপড় উৎপাদনের চাহিদা বেড়ে গেলে স্পিনিং মিলগুলো মিলগেট থেকেই সুতার দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সে তুলনায় কাপড়ের দাম বাড়েনি। ফলে অনেক তাঁতি তাঁত বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেতে তাঁতিদের টিকিয়ে রাখার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।’
টানবাজার থেকে নিয়মিত সুতার ক্রেতা পাওয়ারলুমের মালিক সোবহান মিয়া জানান, রোজা শুরুর দু-তিন মাস আগে তাঁতিরা কাপড় উৎপাদনের জন্য সুতা বেশি কিনে থাকে। সে সময় স্পিনিং মিলগুলো সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বাজার থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু এখন ডাল সিজন। তাঁতিরা যে কাপড় উৎপাদন করেছে সেই টাকাই মিলমালিকদের কাছ থেকে উঠাতে পারছে না।