আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের অবমূল্যায়ন
আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন ডলারের অবমূল্যায়ন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাসিক কর্মপ্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদহার পুনরায় বাড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়, যা চাপ সৃষ্টি করেছে ডলারের ওপর। পাশাপাশি ভূমিকা রেখেছে চীনের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন। খবর রয়টার্স।
মাসিক কর্মপ্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৯ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ পেয়েছে। কিন্তু নিয়োগের বৃদ্ধি ছিল আড়াই বছরের সর্বনিম্ন। অন্যদিকে ১৫ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো পে-রোল ছিল প্রত্যাশার তুলনায় কম। নিয়োগের মাধ্যমে বেকারত্বের হার কমলেও ফেডের সুদহার বাড়ানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর আগেও অন্তত ১০ বার সুদহার বাড়িয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। ফলে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে ডলার। সর্বশেষ এশিয়ার বাজারে জাপানে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১৪২ দশমিক ৩০ ইয়েন ছিল, যা ইয়েনের জন্য ১ দশমিক ৪ শতাংশ উল্লম্ফন। জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার প্রায় শূন্যের কাছাকাছি রেখেছে, ফলে ডলারের বিপরীতে ইয়েন দ্রুত প্রভাবিত হয়। পেপারস্টোনের গবেষণা প্রধান ক্রিস ওয়েস্টন দাবি করেছেন, ‘এমন কোনো বাজার নেই, যেখানে পে-রোল প্রত্যাশা অতিক্রম করতে পেরেছে।’
মার্কিন ডলারের বিপরীরে ব্রিটিশ পাউন্ড উঠেছে বার্ষিক ১ ডলারের শীর্ষে। সর্বশেষে প্রতি পাউন্ডের বিপরীতে ১ দশমিক ২৮২৯ ডলার বিক্রি হয়েছে। মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদহার উত্তীর্ণ হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে, যা ২৫ বছরে সর্বোচ্চ। তবে প্রতি ইউরোর বিপরীতে ডলারের মান ছিল ১ দশমিক শূন্য ৯৫৮ ডলার, যা আগের তুলনায় কমেছে। ইউএস ডলার ইনডেক্স দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বেড়ে ১০২ দশমিক ৩৮-এ উত্তীর্ণ হয়েছে, যেখানে ইউরো উত্তীর্ণ হয়েছে দশমিক ৭ শতাংশ। ওয়েস্টন বলেছেন, ‘আমি ডলারের গতবিধির ওপর আস্থা রাখতে পারছি না। বলতে পারছি না, এটা স্থির কিনা। কিন্তু পুঁজিবাজার এখনো ফেডের দিকেই তাকিয়ে।’
এশিয়ার বাজারে চীনের মূল্যস্ফীতি ছিল গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। জুনে মূল্যস্ফীতি ছিল দশমিক ২ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা বেইজিংয়ের পদক্ষেপ নিয়ে আশাবাদী হয়ে পড়েছেন। মার্কিন ডলারের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ান ডলার দশমিক ১৪ শতাংশ কমেছে। প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিপরীতে ছিল দশমিক ৬৬৮৩ মার্কিন ডলার। এদিকে নিউজিল্যান্ডের ডলারের অবনমন ঘটেছে দশমিক ১৬ শতাংশ। প্রতি নিউজিল্যান্ডের ডলারের বিপরীতে রয়েছে দশমিক ৬১৯৯ মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এমইউএফজির বিশ্লেষকরা বলেন, ‘চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমরা এ মুহূর্তে কার্যকর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। চীনা মুদ্রা ইউয়ানের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা জরুরি।’