আগামী বছর জাপানি প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম বাড়াবে

স্টাফ রিপোর্টার

আগামী বছর পণ্যের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ জাপানি প্রতিষ্ঠান। ডলারের বিপরীতে ইয়েনের অবমূল্যায়নে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এ পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। জাপানভিত্তিক কিয়োদো নিউজের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

টয়োটা মোটর, নিনতেনদো ও শিসেইদোসহ সমীক্ষা করা প্রায় ৮০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩ শতাংশ  ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তবে ৪৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়ার কথা জানিয়েছে।

সংস্থাগুলো মূল্যবৃদ্ধি পরিকল্পনার কারণ হিসেবে ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ব্যয়, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হারের পতনকে দায়ী করছে। ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের ওপর ৭ থেকে ২১ নভেম্বর পরিচালিত এ জরিপে ৮০টি প্রতিষ্ঠান উত্তর দিয়েছে। এছাড়া ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সিদ্ধান্ত প্রকাশে অসম্মতি প্রকাশ করেছে।

চলতি মাসে টোকিওতে কোর ভোক্তা মূল্যসূচক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। এ হার জাপানের রাজধানীর ইতিহাসে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাজা খাবার বাদ দিয়ে টোকিওর কোর মূল্যস্ফীতি হিসাব করা হয়ে থাকে। চলতি মাসে কোর মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বিদ্যুতের বিল ও খাদ্যের দাম। ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হার কমে যাওয়ায় আমদানি খরচ ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় জাপানি পরিবারগুলোর বাজেটে চাপ তৈরি করছে। টোকিওর মূল্যস্ফীতির তথ্য দেশব্যাপী পরিস্থিতির ইঙ্গিত হিসেবে কাজ করে।

সমীক্ষায় কেবল পাব চেইন তোরিকিজোকু হোল্ডিংস মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে না বলে জানিয়েছে। এছাড়া চলতি বছর কতবার দাম বাড়ানো হয়েছে জানতে চাইলে ১৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান একবারও বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছে। যেখানে ২৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান একবার এবং ১৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দুইবার মূল্যবৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তিন বা চারবার এবং ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান পাঁচের অধিক বার পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এভাবে দাম বাড়ানোর পরও অতিরিক্ত ব্যয়ের ৭০ শতাংশেরও কম পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। দাইয়ো পেপার করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট ইওরিফুসা ওয়াকাবায়াশি বলেন, পরিমাণের ক্ষেত্রে বিক্রি কমে যাওয়ার বিষয়টি ধরে নিয়েই আমাদের পণ্যের দাম বাড়াতে হয়েছে। এক্ষেত্রে বিপণন দলকে মুনাফা সুরক্ষিত করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে মাত্র ৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের মধ্যে আগামী বছর কর্মীদের বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে। তবে ৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বেতন বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *