আগামীকাল ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন আগামীকাল। সফরে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর সম্পর্কে আজ বেলা সাড়ে ৩টায় ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত পৌঁছলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে। এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। একই দিন হায়দরাবাদ হাউজে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজেও তার যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

জানা গিয়েছে, সফরের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, পানি বণ্টন, নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে। দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব নিবিড় করতে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) শীর্ষক চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শেষে এ বিষয়ে ঘোষণাও আসতে পারে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সম্পর্কে ১ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ)। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এমইএ মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, এ সফরে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। চারদিনের সফরে শেখ হাসিনার আজমির শরিফ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অরিন্দম বাগচি আরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফরসহ উচ্চপর্যায়ের সম্পর্ক বজায় রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে।

ওইদিন রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতের নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলে থাকবেন কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দিল্লিতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৮ সেপ্টেম্বর আজমির শরিফে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন বিকালে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারত সফর করেছিলেন শেখ হাসিনা। বর্তমান বিশ্বপ্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন কূটনীতিক ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে সফরটির তাত্পর্য অনেক। সফরটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে এবং এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ ত্বরান্বিত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *