অফারের ছড়াছড়ি, আবাসন মেলায় বেড়েছে দর্শনার্থী

স্টাফ রিপোর্টার

আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২’ শুরু হয়েছে বুধবার। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া আবাসন মেলার দ্বিতীয় দিন (বৃহস্পতিবার)। মেলার দ্বিতীয় দিনেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। পাঁচ দিনব্যাপী রিহ্যাব ফেয়ারে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আবাসন কোম্পানিগুলো দিচ্ছে বিভিন্ন অফার আর মূল্যছাড়।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর, ২০২২) সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীর অনেকেই ফ্ল্যাট বা প্লট বুকিং দিচ্চেন। কেউ কেউ আবার পছন্দের প্রকল্প সম্পর্কে জানতে এসেছেন। মেলা চলাকালীন আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন প্লট-অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বুকিং দিলেই পাচ্ছেন বিশেষ ছাড়। কোম্পানি ভেদে রয়েছে নানা ধরনের অফার আর ছাড়। অনেক কোম্পানি আবার বুকিংয়ের সঙ্গে সঙ্গেই দিচ্ছে নানা উপহার। যেটা লুফে নিচ্ছেন আগতরা।

মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় এসেছেন রিতা আহমেদ। তিনি বলেন, আমি ধানমন্ডি কিংবা মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাই। এর আগে বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু পছন্দমতো পাইনি। আজ মেলায় আসলাম। কারণ মেলায় একই ছাদের নিচে অনেকগুলো কোম্পানি পাওয়া যায়। এছাড়াও এখানে নানা অফার ও ছাড় থাকে। এরইমধ্যে কয়েকটা কোম্পানির স্টল ভিজিট করেছি, এখনও দেখছি। পছন্দ হলে বুকিং দেবো।

শরীফ আহমেদ এসেছেন পুরান ঢাকা থেকে। তিনি বলেন, রাজধানীর উত্তরার দিকে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাই। অনেক কোম্পানির প্রকল্প দেখেছি। কোনোটা পছন্দ হয়েছে, কোনোটা আবার হয়নি। আমি আরও কিছুটা ঘুরে তারপর বুকিং দিতে চাই। কারণ এখানে বুকিং দিলেই ছাড় পাওয়া যাবে। সঙ্গে রয়েছে নানা উপহার। তাছাড়া মেলায় বুকিং দিলে বাড়তি ঝামেলা নেই। কারণ এখানে আসা সব কোম্পানি রিহ্যাব সদস্য।

এদিকে, ক্রেতা টানতে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন অফার আর মূল্যছাড় দিচ্ছে। কেউ কেউ উপহার সামগ্রীর পাশাপাশি দিচ্ছে ওমরাহ করার সুযোগ। মেলায় প্রাণ-আরএফএল  দিচ্ছে কিচেন আইটেম এবং ফিটিংস আইটেমে ১০ থেকে ২০ শতাংশ ছাড়। প্রাণ-আরএফএল স্টলে দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রায়হান আলী জানান, মেলা উপলক্ষে আমাদের এখানে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। যেকেউ এখান থেকে বুকিং দিলেই পাবেন ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়।

মেলায় সেবা হোল্ডিং ১০ শতাংশ ছাড়ের পাশাপাশি দিচ্ছে বুকিং দিলেই ওমরাহ করার সুযোগ। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রেতারা জানান, তাদের বিভিন্ন প্রকল্পে বুকিং দিলে এ ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবে এ সুযোগ শুধুমাত্র চলতি মাসের জন্যই প্রযোজ্য হবে বলে জানান তারা।

গ্রিনল্যান্ড মডেল টাউনও নিয়ে এসেছে বিশেষ ছাড়। মেলা উপলক্ষে বুকিং দিলেই পাওয়া যাচ্ছে বিনামূল্যে ওয়াশিং মেশিন। তাদেরও এ সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্র মেলা কেন্দ্রিক। মেলার পরে আর এই সুযোগ থাকবে না।

মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সোহেল রানা জানান, ২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার শুরু হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪টি ফেয়ার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। একইসঙ্গে ২০০৪ সাল থেকে বিদেশে হাউজিং ফেয়ার আয়োজন করছি আমরা। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২টি, যুক্তরাজ্য, ইতালির রোম, কানাডা, সিডনি ও কাতারে একটি মেলা করেছি। এছাড়াও দুবাইতে দুটি মেলা সফলভাবে আয়োজন করে রিহ্যাব। এসব মেলা আয়োজনের মাধ্যমে রিহ্যাব দেশে ও বিদেশে গৃহায়ণ শিল্পের বাজার সৃষ্টি এবং তা প্রসারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে।

মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, প্রবাসী ক্রেতারা যেমন দেশে তাদের পছন্দের আবাসন খুঁজে পেয়েছেন, আবার এই ফেয়ারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি গৃহায়ণ শিল্প এবং লিংকেজ শিল্প বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখছে এ মেলা। এবারের রিহ্যাব ফেয়ারে ১৮০টি স্টল রয়েছে। এই ফেয়ারে (মেলায়) আমরা ৩টি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ৭টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৬টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩ অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি।

মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, অবকাঠামোগত সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে রিহ্যাব। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তিন দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছে রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো। আমাদের উদ্যোগের কারণে মানুষের মৌলিক অধিকারের স্বপ্ন সফল হয়েছে। রিহ্যাব সদস্যদের কারণেই ঢাকার বাইরের অনেক লোক ঢাকায় জমির মালিক হয়েছেন এবং প্রায় ৩ লাখ পরিবার নিজ ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছে। রিহ্যাব সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই আজ শহরগুলোতে সুন্দর সুন্দর নান্দনিক ভবন তৈরি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *