‘অগ্রিম আয়করে ছাড় দেওয়া উচিত তৈরি পোশাক খাতে বিপণন সুবিধার্থে’
আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলক বৈশ্বিক গড় দামের চেয়ে কম দামে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কিনছেন ক্রেতারা। অন্য দেশ থেকে একই পণ্য কেনার সময় একই ক্রেতা বেশি দাম দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রের (আইটিসি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের মন্দা ভাব, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব, অভ্যন্তরীণ ডলার ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছোট ছোট কারখানা যখন বন্ধের খবর শোনা যাচ্ছিল তখনও তৈরি পোশাক শিল্পে আসছে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী। প্রায় বিশ বছর তৈরি পোশাক শিল্পের নানা স্তরে কাজ করে আরিফ মুনসুরি সাম্প্রতি নাম লিখিয়েছেন উদ্যোক্তা হিসেবে।
এই সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পে নতুন উদ্যোক্তাদের কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, এমন প্রশ্নে আরিফ মুনসুরি বলেন, ‘কম এফওবি মূল্য পাওয়ার কারণে অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ, দামে ন্যায়সঙ্গতা ফিরিয়ে আনা এই মুহূর্তে তৈরি পোশাক খাতের সবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও মেক্সিকো কেনো বেশি দাম পায় তার কারণ খুঁজে দেখে, ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আর বিপণন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজালে নতুন বাজার তৈরি করা সহজ হবে।’
তিনি বলেন, ‘অগ্রিম আয়করের হার ১০ শতাংশ, যা হ্রাস করে ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে আসছে বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিজিবিএ)।‘
তিনি আরও বলেন, ‘বায়িং হাউজগুলো এত প্রতিকূলতার মধ্যে বিপণন করে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের গার্মেন্টস ব্যবসা করেছিল তবুও মহামারির কালের মধ্যে সরকারি প্রণোদনা কিছুই আমরা পাইনি। আপনারা জানেন, মহামারিতে ভারত সুতা কেনার জন্য প্রতি পাউন্ডে ২৫ রুপি ভর্তুকি দিয়েছে, এসব তথ্য জেনেও কেউ এগিয়ে আসেনি।‘
অভ্যান্তরীণ কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ আছে যোগ করেন আরিফ মুনসুরি। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক বাজার রক্ষায় সরকারের নীতিসহায়তা প্রয়োজন। কাপড় কাটা ও সেলাই প্রক্রিয়া বাইরে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন পক্রিয়ায় ট্রান্সফর্ম করাতে রাষ্ট্রের কৌশলগত দিকগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভ্যালু চেইনে প্রাথমিক কাঁচামাল অভ্যান্তরীণ বাজারে তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া। তৈরি পোশাক শিল্পের মূল কাঁচামাল কিন্তু তুলা যা আমদানি নির্ভর।’
আমদানারি নির্ভারতা কমাতে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেল ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের ওপর চাপ বাড়ছে। ক্রয়াদেশ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আরও সহজ শর্তে সরকারের উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। প্রাথমিক কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৌশলগত নীতিমালা দরকার। অভ্যান্তরীণ তুলা উৎপাদনের প্রাথমিক স্তর কৃষক পর্যন্ত উৎপাদন চেইন তৈরি করতে হবে।’