চীনের বাজারে আধিপত্য বাড়াচ্ছে রাশিয়া

স্টাফ রিপোর্টার

চীন সরকার কর্তৃক জাপানের সি ফুড আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ নিতে তৎপর হয়ে উঠেছে রাশিয়া। চীনের সি ফুড বাজারে এরই মধ্যে সক্রিয় থাকা রাশিয়া জাপানকে প্রতিস্থাপিত করতে চায়। সম্প্রতি জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়া হয়। ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সব ধরনের জাপানি সামুদ্রিক খাবার নিষিদ্ধ করে চীন। খবর সিএনবিসি।

রাশিয়ার খাদ্য তদারকি সংস্থা রোসেলখোজনাদজরের দাবি অনুসারে, চীনের বাজারে সামুদ্রিক পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়ার অবস্থান শীর্ষে। ৮৯৪টি রাশিয়ান কোম্পানি সি ফুড রফতানির জন্য অনুমোদন পেয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিবৃতিতে রোসেলখোজনাদজর রফতানি বাড়ানোর ব্যাপারে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনা বাজার রাশিয়ান মৎস পণ্যের অন্যতম গন্তব্য। আমরা আরো বেশি রাশিয়ান কোম্পানি ও জাহাজ প্রেরণ করতে চাই চীনে। বাড়াতে চাই পণ্যের পরিমাণ।

রোসেলখোজনাদজরের পরিকল্পনা অনুসারে, সামুদ্রিক পণ্য রফতানি ও নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য আলোচনা করা হবে চীনের সঙ্গে। কাজ করা হবে নীতিমালা নিয়ে। বেইজিং অনির্দিষ্টকালের জন্য জাপানের সামুদ্রিক খাবার আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ২০১১ সালের দুর্ঘটনার পর সীমিত পরিসরে ফুকুশিমার কাছের অঞ্চলগুলো থেকে সি ফুড আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জানিয়েছিল দেশটি।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত রাশিয়ার সামুদ্রিক পণ্য রফতানির অর্ধেকেরই গন্তব্য ছিল চীন। পোলক, হেরিং, ফ্লাউন্ডার, সার্ডিন, কডমাছ ও কাঁকড়া রফতানি হয় দেশটিতে। রাশিয়া গত বছর ২৩ লাখ টন সামুদ্রিক পণ্য রফতানি করেছে, যার মূল্য প্রায় ৬১০ কোটি ডলার। রাশিয়ার মৎস সংস্থার তথ্য অনুসারে, আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।

জাপানের দাবি ছিল, চীন ও রাশিয়ার পানির দূষণ নিয়ে সমালোচনা বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের পরিপন্থি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেয়া সীমার মধ্যেই রয়েছে পানিতে দূষণের মাত্রা। তবে রোসেলখোজনাদজর জানিয়েছে, যেকোনো মাত্রায় জাপানি সামুদ্রিক পণ্য আমদানি হলেই তাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিরীক্ষা করা হবে। নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা, রাশিয়ার সামুদ্রিক পণ্য রফতানির ৭০ শতাংশই দূর প্রাচ্যের দেশগুলোয়। রাশিয়ান জাহাজগুলোর মাধ্যমে ধরা সামুদ্রিক পণ্যগুলোকে দূষণমুক্ত হিসেবে প্রমাণিত হতে হবে, বিশেষ করে ফুকুশিমার কাছাকাছি রাশিয়ার জলসীমার মধ্যে র‌্যাডিয়েশন পরীক্ষা করা হবে।

এদিকে সামুদ্রিক পণ্য রফতানি সামনের সারিতেই রয়েছে জাপান। দেশটির ফিশারিজ এজেন্সি অনুসারে, ২০২২ সালে সামুদ্রিক মাছ রফতানির মোট মূল্য ছিল প্রায় ৩৮৭ কোটি ইয়েন বা ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার। এশিয়ান সামুদ্রিক খাবারের বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে চীনে রফতানির পরিমাণ ছিল মোট রফতানির ২২ দশমিক ৫ শতাংশ। চীনে প্রধান রফতানি আইটেমের মধ্যে রয়েছে স্ক্যালপস, বোনিটো ও টুনা মাছ। জাপান সি ফুড রফতানি ২০৩০ সালের মধ্যে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়নে দাঁড় করানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। ফিশারিজ এজেন্সির দাবি, বৈশ্বিক খাদ্যবাজার দখলের জন্য সামুদ্রিক পণ্য রফতানির সম্প্রসারণ গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বাজারে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় জাপান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *